শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর লাশ বুড়িগঙ্গায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

যশোর জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকরের লাশ ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রাতে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। যশোর জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর আবুকে ঢাকা থেকে অপহূত হয়েছে বলে এর আগে অভিযোগ উঠেছিল। তিনি যশোরের একটি আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

১৮ নভেম্বর রবিবার রাত ৮টার পর রাজধানীর পল্টন এলাকা  থেকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল। পল্টন এলাকার মেট্রোপলিটন হোটেলের চতুর্থ তলায় ৪১৩ নম্বর কক্ষে থেকে তিনি দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনেন এবং জমা  দেন। ১৯ নভেম্বর সোমবার সাক্ষাৎকার বোর্ডে অংশ নেওয়ার জন্য ওই  হোটেলেই অবস্থান করছিলেন আবু। আবুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নের জন্য আবু বকর আবু ১২ নভেম্বর ঢাকায় আসেন। ১৮ নভেম্বর রবিবার রাত ৮টার দিকে তার সঙ্গী মজিদপুর ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম ওষুধ কিনে ফিরে এসে তাকে আর কক্ষে পাননি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার ব্যবহূত মোবাইল ফোন থেকে কেশবপুরে অবস্থানরত তার এক ভাগ্নের মোবাইলে কয়েকবার মিস্ড কল আসে। কয়েকবার কল ব্যাক করা হলে প্রতিবার শুধু ‘হ্যালো, হ্যালো’ ছাড়া ওপাশ থেকে কোনো কথা শোনা যায়নি। এরপর আবুর নম্বর থেকে ভাগ্নের কাছে ফোন দিয়ে তার মামার জন্য দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ওই রাতে তার পরিবারকে কয়েকটি বিকাশ নম্বরও সরবরাহ করে অপহরণকারীরা। কিন্তু রাত ১২টার পর বিকাশের কোনো দোকান খোলা না পাওয়ায় টাকা পাঠানো সম্ভব হয়নি। গতকাল সকালে অপহরণকারীরা আরেকটি নম্বর থেকে আবারও যোগাযোগ করে। এরপর তাদের দেওয়া বিভিন্ন নম্বরে দেড় লাখ টাকা বিকাশ করা হয়। সকাল ৯টার দিকে অপহরণকারীরা দেড় লাখ টাকার প্রাপ্তি স্বীকার করে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। বহু অনুরোধের পর অপহরণকারীরা ২০ হাজার টাকা বিকাশ করার জন্য দুটি নম্বর সরবরাহ করে বলে, টাকা পাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে আবু বকর আবুকে ওই হোটেলের সামনে ছেড়ে আসা হবে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ২০ হাজার টাকা বিকাশ করার পরও তাকে ছাড়া হয়নি এবং অপহরণকারীরা আর মোবাইল রিসিভ করেনি।

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন : গতকাল রাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী দাবি করেন, চারবারের ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর আবু বিএনপির মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে গুলশানে বিএনপি  চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য ঢাকার একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। বুড়িগঙ্গা নদীতে তার লাশ পাওয়া গেছে। এলাকার একজন জনপ্রিয়  নেতা ও জনপ্রতিনিধি আবু বকর আবুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর লাশ বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন আন্দোলনকারীর লাশ এভাবেই ভেসে উঠেছিল বুড়িগঙ্গায়। সরকার এখন আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে। বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

আমি আবু বকর আবু হত্যার ঘটনায় তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। অবিলম্বে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি।’

সর্বশেষ খবর