জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, নিরপেক্ষতা না রাখতে পারলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পরিবর্তন করতে হবে। তার পরিবর্তে বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি হতে হবে সিইসি। তিনি বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি করা হচ্ছে। গণভবন, মন্ত্রীদের বাসভবন, সরকারি অফিস নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সিইসির এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ড. কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সিইসি নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখছেন না। এমন ভূমিকা রাখলে তাঁকে পরিবর্তন করতে হবে। যদি সিইসি কারও দ্বারা আদিষ্ট হয়ে এসব কর্মকাণ্ড করেন তবে তা সংবিধান লঙ্ঘন। এখনো সময় আছে সঠিক ভূমিকা রাখুন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন এই তফসিলেই হবে। আমরা নির্বাচনে আছি এবং থাকব। দেশের মানুষ একটি সুষ্ঠু ভোট দেখতে চায়। নির্বাচন কমিশনের কাজ সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। কিন্তু বর্তমান কমিশন সুষ্ঠু ভোট হোক এমন কার্যক্রম না করে সরকারি দলকে বিশেষ সুবিধা প্রদানে ব্যস্ত। ড. কামাল বলেন, সিইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তাদের নির্দেশ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তাহলে সারা দেশে পুলিশ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের টেনে হিঁচেড়ে গ্রেফতার করছেন, এসব করার নির্দেশ কে দিয়েছে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারলে সিইসি ইতিহাসে সংবিধান লঙ্ঘনকারী হিসেবে চিহ্নিত হবে। গণফোরাম সভাপতি বলেন, ২০১৪ সালের মতো নামকাওয়াস্তে নির্বাচন এবার হবে না। আমরা নির্বাচনে এসেছি একটি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সেটি করতেই হবে। পুলিশ শুধু সরকারের নয়। এটি জনগণের বাহিনী। সবাই নিরাপত্তা পাবে পুলিশের। কিন্তু আমরা দেখছি উল্টো। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের পুরোপুরি কর্তৃত্বের মধ্যে থাকলেও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আইন বহির্ভূতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী পক্ষের ওপর হাজার হাজার মামলা, গ্রেফতার ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে। এমনকি নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন তাদেরকেও উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় মামলা ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। সারা দেশে পাইকারি হারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। জেলে জায়গা নেই বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের রাখার। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে জামিনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি সুবিধা নিয়ে মন্ত্রী এমপিরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর বিরোধী দলের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো কাজ করা হচ্ছে। যেমন, কর্মীদের সঙ্গে নিজ এলাকায় বৈঠক পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। সুষ্ঠু ভোট করতে হলে, নির্বাচন করতে হলে এই আচরণ পাল্টাতে হবে। বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি হতে হবে সিইসিকে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ, ড. রেজা কিবরিয়া, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, প্রমুখ।