বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আট কোটি টাকাসহ ব্যবসায়ী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

আট কোটি টাকাসহ ব্যবসায়ী আটক

উদ্ধার টাকা ও বিএনপির লিফলেট

টাকা ছড়িয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগে নগদ আট কোটি টাকা এবং ১০ কোটি টাকার চেকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সোমবার রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-৩-এর একটি দল আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হায়দার (২৪), গুলশানের আমেনা এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক (জিএম, প্রশাসন) জয়নাল আবেদিন (৪৫) ও অফিস সহকারী আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করে। র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, টাকার পেছনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এপিএস মিয়া নুর উদ্দিন অপুর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে একজন হাওয়া ভবনের সাবেক কর্মকর্তা।

গতকাল বিকালে রাজধানীর মতিঝিলের সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল। একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ভোট কেনার জন্য দুবাই থেকে বাংলাদেশে এসব টাকা পাঠানো হয়েছিল। জব্দ করা টাকার সঙ্গে বিভিন্ন কাগজপত্র ও শরীয়তপুর-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী নুর উদ্দিন অপুর পোস্টার পাওয়া গেছে। এ ছাড়া একটি আসনের ভোটারদের নাম, মোবাইল নম্বর ও ঠিকানাসহ একটি বইও পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভোট কেনার জন্যই এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।

র‌্যাবের ডিজি বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় টাকা ছড়াতেন। সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় যেখানে অভিযান চালানো হয়েছে, সেখানে ইউনাইটেড করপোরেশন ও ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই মাস আগে অফিসটি ভাড়া নেওয়া হয়। এরপর গত দুই মাসে ওই অফিস থেকেই দেড় শ কোটি টাকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। বেনজীর আহমেদ বলেন, ইউনাইটেড করপোরেশনের কথিত মালিকের গত এক মাসের ব্যাংক হিসাব পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি ৭৩ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন এবং গত দুই মাসে এক কোটি টাকা দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনকে প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং পেশিশক্তির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতেই টাকাগুলো এখান থেকে পাঠানো হচ্ছিল। এখানে একজন প্রার্থীর কাগজপত্র দেখতে পেয়েছি, যাকে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। তিনি শরীয়তপুর-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী নুর উদ্দিন অপু। তার এলাকায় টাকা যাওয়ার পর নির্বাচনী সহিংসতা হয়েছে। আমরা দেখেছি, দেশের যেসব স্থানে টাকাগুলো গেছে, সেখানেই সহিংসতা হয়েছে।’

র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ‘এই অফিস থেকে কোনো দিন ১১ কোটি টাকা, কোনো দিন ২০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। টাকাগুলো অধিকাংশ দুবাই থেকে হুন্ডি ও ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে। দুই মাসে আমরা ১৫০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছি। তবে এ অফিসের লোকজন টাকার রেকর্ড বেশি দিন রাখে না। তাই আমরা সব তথ্য পাইনি।’ জব্দ করা যন্ত্রাংশগুলোর ফরেনসিক টেস্টের পর লেনদেনের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর