বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দলগুলোর অভিযোগ চাপে রাখার কৌশল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দলগুলোর অভিযোগ চাপে রাখার কৌশল

নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনকে চাপে রাখতে কোনো কোনো দল ও প্রার্থী অভিযোগ করছেন। এটা তাদের রাজনৈতিক কৌশল। পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। দেশ ও জনগণের জন্যই আমরা কাজ করব, করছি। তবে অভিযোগ সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর বনানী ক্যাথলিক চার্চ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকায় নির্বাচনী অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা উৎসাহ-উদ্দীপনায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে সর্বোতভাবে প্রস্তুত রয়েছি। আমরা যদি তুলনা করি, পূর্বের তুলনায় ঢাকায় সহিংসতা ও গোলযোগ খুবই কম।

কমিশনার বলেন, আমরা নগরবাসী ও বাংলাদেশের সব নাগরিককে বার্তা দিতে চাই, অত্যন্ত নিরাপত্তার স্বার্থে ও সমন্বিত পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে কাউকে যেন বিড়ম্বনার শিকার হতে না হয় সেজন্য আমরা ও সশস্ত্র বাহিনী তৎপর রয়েছি। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের প্রস্তুতি সন্তোষজনকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। নির্বাচনী কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে- কোনো কোনো প্রার্থী বা দলের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা নানা ধরনের অভিযোগ দিতে পারেন। সে ব্যাপারে বিতর্ক করব না। কারণ আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমি মনে করি এটা প্রতিপক্ষ, নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসনকে চাপের মুখে রাখার কৌশল হতে পারে।

ডিএমপি প্রধান বলেন, ভোট চাওয়া বা ক্যাম্পেইনের ব্যাপারে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে বা কেউ সম্মুখীন হয়েছেন বলে আমি মনে করি না। নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করার জন্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী, পেশিশক্তি যারা প্রয়োগ করতে পারে, দখলবাজ, চাঁদাবাজ যারা, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের দায়িত্ব। আমরা সেই কাজটি করছি।

কোনোভাবে ভোটকেন্দ্রে বা ভোট গ্রহণের আগে ও পরে কেউ যেন জনগণের নিরাপত্তা বিঘœ করতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক আছি। যারা অভিযোগ করছে, তারা তাদের স্বার্থ চিন্তা করে প্রশাসনকে চাপে ফেলার জন্য মনগড়া ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। তবে জেনুইন ২/৪টা অভিযোগও রয়েছে। সেগুলো আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব রটানো হচ্ছে। সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন সাইট ও ফেসবুকে, ফেক আইডি খুলে আমাদের সার্ভিস বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যেও বিভেদ তৈরির জন্য অনেক মিথ্যাচার ও প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। যা অত্যন্ত আতঙ্কের বিষয়। এ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যে কোনো ধরনের নৈরাজ্য, অনিয়ম মোকাবিলা করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা প্রস্তুত। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার, পুলিশ, প্রশাসন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সবার মাঝে চমৎকার সমন্বয় রয়েছে। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা টিম হিসেবে সবাই দেশের জন্য কাজ করছি। দেশের আইন ও সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর