শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

উন্নয়ন ধারাবাহিকতায় হ্যাটট্রিক জয়ের প্রত্যাশা আওয়ামী লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হ্যাটট্রিক জয় প্রত্যাশা আওয়ামী লীগের। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ যে উন্নয়ন করেছে, তা ধরে রাখতে নৌকার বিকল্প নেই। উন্নয়নের জন্য এ জন্য ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।  এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।   

জানা গেছে, ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দলটি। টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়েছে অনেক দূর। এবার লক্ষ্য হ্যাটট্রিক জয়ের। এতে ক্ষমতাসীনরা জোর দিচ্ছে সরকারের ধারাবাহিকতায়। উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশকে কোথায় দেখতে চান সে স্বপ্নের কথা তুলে ধরছে জাতির সামনে। ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। দলের সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায়। প্রার্থীরা নিজ থেকে ভোটারদের স্থানীয়ভাবে আরও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রতিটি ভোটারের ঘরে ঘরে ভোট প্রার্থনা করে এখন নির্বাচনের অপেক্ষা করছেন মহাজোটের প্রার্থীরা। এরই মধ্যে প্রার্থীরা এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মহাজোটের প্রার্থীরা। জানা গেছে, আগামীকালের ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ের প্রবেশ পথের এক পাশে বসানো হয়েছে কাউন্টডাউন প্রজেক্টর, অন্য পাশে বিশাল আকৃতির একটি মনিটর। এই মনিটরে সারা দেশের নির্বাচনী খবরাখবর দেখতে পাবেন নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র। এখান থেকে যেমন নেতা-কর্মীরা নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন, তেমনি গণমাধ্যম কর্মীরাও নিতে পারবেন প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সর্বশেষ আপডেট। আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নিজ দলের ও মহাজোটের মনোনীত সব প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যক্রম মনিটরিং ও সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আট বিভাগের জন্য আটটি টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বর স্থাপন করা হয়েছে। এসব নম্বরে সারা দেশের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভাসহ সব শাখার নেতাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগের সুবিধা থাকছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশে প্রতিদিনকে বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব ধরনের হিসাবে আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছে। তাই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে বলে আশা করি। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি নিয়ে বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে নারী ও তরুণেরাই শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করবে। আওয়ামী লীগ হ্যাটট্রিক জয় পাবে। জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই আওয়ামী লীগ থেকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য নৌকায় ভোট চাওয়া হয়। দলের সভানেত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী, এমপিরা উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতার ওপর জোর দেন। নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া থেকে নির্বাচনী জনসভা শুরু করেন। এ ছাড়াও ২০-এর অধিক জেলায় ভিডিও কনফারেন্স এবং সরাসরি ১০-এর অধিক জেলায় জনসভা করেছেন। প্রত্যেক জনসভায় তিনি উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা চেয়ে বলেছেন, নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে, বিজয় নিশ্চিত। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ধানের শীষ মানে দুর্নীতি-সন্ত্রাস আর নৌকা মানে উন্নতি-সমৃদ্ধি। আওয়ামী লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসেনি, জনকল্যাণই লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের সময়ে বিএনপি আমলের হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতি হয়নি, মানুষ শান্তিতে রয়েছে, স্বস্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করতে ক্ষমতায় আসে না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদী দল হিসেবে বিএনপিকে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এতিমের টাকাও নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে। তফসিল ঘোষণা হয়েছে। শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই সবাইকে কাজ করতে হবে। উন্নয়নের কথা বলে ভোট চাইতে হবে। তাহলেই নৌকার বিজয় নিশ্চিত। সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দেশের তরুণরা শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয় সুনিশ্চিত করবে। তরুণদের হাত ধরেই ৬৯ (গণঅভ্যুত্থান)-এ জয় হয়েছিল। তরুণরাই মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ গঠনে তরুণদের ভূমিকা অনেক। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতীক নৌকা। দেশবাসী উন্নয়নের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা হ্যাটট্রিক প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বিশ্বে রেকর্ড গড়বেন।

সর্বশেষ খবর