রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোটের মাঠে চোখ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও কূটনীতিকদের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ভোট গ্রহণ ও এ উপলক্ষে প্রতিটি ঘটনাপ্রবাহের দিকে দৃষ্টি রেখেছে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী বন্ধু রাষ্ট্র ও জোটগুলো। অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের রাজনৈতিক অধিকার ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশের দিকে এতদিন বিশেষ দৃষ্টি রেখেছে দূতাবাসগুলো। এ ছাড়া ভোটের দিন সরাসরি মাঠে গিয়ে প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণেরও প্রস্তুতি নিয়েছে নয়টি দূতাবাস। বাকিরা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষক সংস্থার মাধ্যমে মূল্যায়ন করবে ভোট গ্রহণকে। তবে আগেপরের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে সব দূতাবাসই বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে তাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদের।

জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনজোল্জ জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনের ওপর আমরা গভীরভাবে নজর রাখব। আমি নিজেই পরিদর্শনে যাব।’ ঢাকার ইইউর রাষ্ট্রদূত রিনসে তিরিঙ্ক বলেছেন, পর্যবেক্ষক মিশন না পাঠালেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের ওপর গভীর নজর রাখবে ইইউ। ইতিমধ্যেই দুই নির্বাচন বিশেষজ্ঞ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভালো স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা রয়েছেন। আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে তারা সম্ভবত চমৎকার ভূমিকা রাখবেন। জানা গেছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ঢাকায় থাকা বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বা হাইকমিশন এবং নয়টি বিদেশি সংস্থার ১৮৮ জন মাঠে থাকবেন। ইইউর দুজন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দেশে অবস্থান করছেন। তারা এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। নেপালের বেসরকারি সংস্থা দীপেন্দ্র ইনিশিয়েটিভ কেন্দ্র থেকে তিনজন থাকবেন। এ ছাড়া কমনওয়েলথ, ওআইসি, ফোরাম অব ইলেকশন কমিশন ম্যানেজমেন্ট অব সাউথ এশিয়া (ফেসবোসা), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই), ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই), সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধরা থাকবেন। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, কানাডা, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, সামোয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নাইজেরিয়া, নেপাল, প্যালেস্টাইন, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন প্রভৃতি দেশ থেকে আসবেন প্রতিনিধিরা। ঢাকার বিভিন্ন হাইকমিশন ও দূতাবাসের মধ্যে ফ্রান্স চার, জাপান নয়, স্পেন এক, ডেনমার্ক তিন, নরওয়ে দুই, জার্মানি আট, নেদারল্যান্ডস চার ও সুইজারল্যান্ডের ছয়জন পর্যবেক্ষক থাকছেন। এ ছাড়া ভারতের নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল ইতিমধ্যে ঢাকায় এসেছে। ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় এবার বিদেশি পর্যবেক্ষকের উপস্থিতি কম। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৫৯৩ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। ২০০১ সালে ছিলেন বিদেশি ২২৫ জন পর্যবেক্ষক। সবচেয়ে কম পর্যবেক্ষক ছিলেন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে, মাত্র চারজন বিদেশি পর্যবেক্ষক এসেছিলেন বাংলাদেশে। তবে এবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনেও অনুদানের অভাবে বিদেশি সংস্থাগুলো নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসেনি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। রোহিঙ্গা সংকটেই এসব অনুদান বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিবিসি-সিএনএনসহ ৫৬ বিদেশি সাংবাদিক : নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ৫৬ বিদেশি সাংবাদিক বাংলাদেশে কাজ করছেন। এর মধ্যে বিবিসি, কেবল নিউজ ইন্টারন্যাশনাল, ডয়েসে ভেলে, এনএইচকে, ইয়োমিউরি সিমবান, এএফপি, এপি, নিউজ এজেন্সি, আলজাজিরা, জার্মান টিভি, টিভি টুডে নেটওয়ার্ক, নিউইয়র্ক টাইমস, ল্য ম্যঁদ, দি ইকোনমিস্ট, জি নিউজ, কাইদো, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (ইউএসএ), স্ট্র্যাটেজিক নিউজ, ফ্রন্টলাইন, দ্য উইক অ্যান্ড মোর ইত্যাদি পত্রিকার বিদেশি সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালন করবেন।

নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে ১৫ আন্তর্জাতিক সংগঠনের বিবৃতি : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক দিন আগে ‘নিয়ন্ত্রণমূলক নির্বাচনী পরিবেশ’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ১৫টি আন্তর্জাতিক সংগঠন। গতকাল ব্যাংককভিত্তিক এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন্স (অ্যানফ্রেল) এ বিবৃতি পাঠায়। বাংলাদেশের ‘অগণতান্ত্রিক নির্বাচনী পরিবেশের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকার দেশের সুশীলসমাজ, বিরোধী দল ও গণমাধ্যমের ওপর খড়্গহস্ত হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর