ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তফসিল অবিলম্বে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মিছিল-পরবর্তী এক সমাবেশে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা এ দাবি জানান। ‘স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য’ শিরোনামে এই সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনটি। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনসহ বিভিন্ন হল শাখার নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, বিশে^র সর্বাধুনিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ, সান্ধ্যকালীন কোর্স নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ, ক্যান্টিনের খাবারের মান যথোপযুক্ত করা, অযৌক্তিকভাবে বর্ধিত সব ফি প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে ‘আন্তর্জাতিক সেমিনার’ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি গ্রহণ প্রভৃতিসহ ১৪ দফা দাবি জানান বক্তারা। রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর হাই কোর্টের নির্দেশে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চলছে। আমরা সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন এ বিষয়ে আন্তরিক। আমরা ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়ে ছাত্রলীগের সক্ষমতা প্রমাণ করতে চাই। তাই প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি অবিলম্বে তফসিল ঘোষণার। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে এখনো নেত্রীর সঙ্গে কোনো কথা বলিনি। তাঁর সঙ্গে কথা বলে আমরা কীভাবে কী করব এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে রোডম্যাপ ঠিক করব। বাংলাদেশ দিন দিন নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাচ্ছে। ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা সম্ভব। গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন চাই। যেন অতিদ্রুত তফসিল ঘোষণা করা হয়। কেননা, সাধারণ ছাত্রদের কথা কারা বলবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সিন্ডিকেটে গিয়ে তাদের কথা বলুক। সমাবেশে সনজিত চন্দ্র দাস ছাত্ররা যাতে রাজনৈতিক চর্চা করতে পারে তাই প্রশাসনকে অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দিতে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে তার প্রতি আমরা সাধারণ ছাত্ররা অবশ্যই শ্রদ্ধাশীল। সাদ্দাম হোসেন বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছাত্ররা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও বিশ্ববিদ্যালয় সিটের নিশ্চয়তা দেয় না। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। সাত হাজার নবীন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কোনো দায়িত্ব নেয়নি। প্রশাসনকে বলতে চাই, আবাসন সংকটের ওপর ভিত্তি করে, সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ রাজনীতি করতে চায় না। হৃদয়ের ভালোবাসা দিয়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই। এর আগে ‘স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য’ শীর্ষক একটি মিছিল মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে গোটা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে অপরাজেয় বাংলার সামনে এসে শেষ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগের বিপুল পরিমাণ নেতা-কর্মী অংশ নেন।