শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডাকসু প্রস্তুতিতে প্রশাসন, ঘর গোছাচ্ছে ছাত্রসংগঠনগুলো

প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছে চার প্যানেল

নাসিমুল হুদা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্রমে পাল্টে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ। আগামী ১১ মার্চ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রসংগঠনগুলো। ক্যাম্পাসে নিজেদের কার্যক্রম বাড়াতে শুরু করেছে নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছু ছাত্রসংগঠনগুলো। প্রার্থী নির্ধারণ ও প্যানেল গঠন নিয়ে শুরু হয়ে গেছে আলোচনা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা জোর দিচ্ছেন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর।

বুধবার ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর এখন পূর্ণাঙ্গ তফসিল, আচরণবিধি ও সংশোধনকৃত ডাকসু সংবিধান নিয়ে প্রশাসন জোরেশোরে এগোচ্ছে। নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, হল প্রাধ্যক্ষ ও উপদেষ্টা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় শেষে উপাচার্য নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছেন। নির্বাচনের অন্যান্য প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই ঘর গোছাচ্ছে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক ছাত্রসংগঠনগুলো। সাধারণত ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল করে অংশ নেয় সংগঠনগুলো। তাই প্রার্থিতা নির্ধারণ ও প্যানেল গঠনের ব্যাপারে সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। কাকে কোন পদে প্রার্থী করা হবে, এই নিয়ে আলোচনা করছেন সংগঠনগুলোর ঊর্ধ্বতন নেতারা। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চারটি প্যানেল অংশ নিতে পারে দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে। প্যানেলগুলো হলো- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রগতিশীল ছাত্রজোট’ ও কোটা আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে আমাদের প্রার্থী নির্বাচন করব। এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষের সব শিক্ষার্থীর মতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। ‘প্রগতিশীল ছাত্রজোট’ তাদের মোর্চাভুক্ত ৬টি বামধারার ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পর প্যানেল করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জোটের সমন্বয়ক ও ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সালমান সিদ্দিকী। এদিকে তারিখ ঘোষণার আগমুহূর্তে এসে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানায় ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। সংগঠনটি হল ও কেন্দ্রীয়ভাবে সংসদে স্বতন্ত্রভাবে প্যানেল দিয়ে নির্বাচনে যাবে বলে জানিয়েছেন পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। নির্বাচনের বিষয়ে ছাত্রদলের একাধিক নেতার সঙ্গে  যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা জোর দিচ্ছেন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর। তাদের দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আসবেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রকৃত ছাত্রনেতা। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের জোরদার ভূমিকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে। এরপর অনেক বার নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। গত বুধবার আবারও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর