বিতর্ক এড়াতে পারেনি চতুর্থ দফার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। বিশেষ করে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি না থাকার বিষয়টি গোটা আয়োজনকেই আকর্ষণহীন করে তুলেছে। এ ছাড়াও ছিল জোর করে ব্যালটে সিল মারা, সংঘর্ষ, কেন্দ্র দখলের মতো ঘটনা। এর মধ্যে কুমিল্লায় দুজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে, তিতাসে সংঘর্ষ-গোলাগুলি হয়েছে, বাগেরহাটের মোল্লাহাটে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন, মুন্সীগঞ্জে গুলিতে দুজন আহত হয়েছেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। গতকাল সকাল ৮টা থেকে দেশের ১০৭ উপজেলায় চতুর্থ দফার ভোট হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পাশাপাশি দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। অনেক এলাকায় নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা গতকাল তাদের বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। গতকাল চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়েছে ৬৭ উপজেলায়। কেননা এর আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ৩৯ জন নির্বাচিত হন। গতকাল রাত দেড়টা পর্যন্ত ৬৭টি উপজেলার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৬টির বেসরকারি ফলাফল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা ৪০টি এবং দলটির বিদ্রোহী ২৫টি এবং স্বতন্ত্র (বিএনপি) একজন বিজয়ী হয়েছেন। ইসির কর্মকর্তারা জানান, চতুর্থ ধাপে ৮৮ জন বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ৩৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২২ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান ২৭ জন রয়েছেন। এ ছাড়া চতুর্থ ধাপের ১৫টি উপজেলায় তিনটি পদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চতুর্থ ধাপে গতকাল পাঁচ বিভাগের ২২ জেলার ১০৭টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। পরে আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখার অভিযোগে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার পুরো নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে ৫টি উপজেলার ১২টি কেন্দ্রের ভোটও স্থগিত হয়েছে। এ ছাড়া ভোটারশূন্য ছিল অধিকাংশ কেন্দ্র। গল্প করে সময় কাটিয়েছেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা। চতুর্থ ধাপে বিজয়ীরা : ঢাকা বিভাগে-ঢাকার ধামরাইয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাদ্দেছ হোসেন এগিয়ে রয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের আলহাজ শাহজাহান ভুইয়া, সোনারগাঁয়ে মোশারফ হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জের ৬টি উপজেলার ৪টিতে আওয়ামী লীগ এবং ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হলেন- মুন্সীগঞ্জ সদরে আওয়ামী লীগের মো. আনিসুজ্জামান আনিস নৌকা, গজারিয়ায় আমিনুল ইসলাম নৌকা, সিরাজদিখানে মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, লৌহজংয়ে ওসমান গণি তালুকদার। বিজয়ী স্বতন্ত্র-বিদ্রোহীরা হলেন- টঙ্গীবাড়ীর জগলুল হালদার ভুতু ও শ্রীনগরের মশিউর রহমান মামুন। টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের শহিদুল ইসলাম লেবু, ভূঞাপুরে অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম, টাঙ্গাইল সদরে শাহজাহান আনসারী, মির্জাপুরে মীর এনায়েত হোসেন মন্টু, সখিপুরে জুলফিকার হায়দার কামাল লেবু। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের মধ্যে কালিহাতীতে আনসার আলী, দেলদুয়ারে মাহমুদুল হাসান মারুফ, বাসাইলে কাজী অলিদ ইসলাম। এ ছাড়া নাগরপুরে আবদুস সামাদ (স্বতন্ত্র, বিএনপি সমর্থিত) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগ-কুমিল্লার ছয়টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চারটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং দুটিতে দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। চান্দিনায় আওয়ামী লীগের তপন বক্সী, মুরাদনগরে ড. আহসানুল আলম কিশোর, হোমনায় রেহানা বেগম, মেঘনায় সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার। বুড়িচংয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আখলাক হায়দার ও ব্রাহ্মণপাড়ায় (বিদ্রোহী) মুহাম্মদ আবু তাহের বিজয়ী হন। কক্সবাজার সদরে আওয়ামী লীগের কায়সারুল হক জুয়েল বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল বিজয়ী হয়েছেন। বরিশাল বিভাগ- পিরোজপুরের ৭টি উপজেলার মধ্যে একটিতে নির্বাচন স্থগিত ও একটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৫টি উপজেলার ৩টিতে নৌকার প্রার্থী, ১টিতে সাইকেল ও অপরটিতে আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। তারা হলেন-পিরোজপুর সদরে আওয়ামী লীগের মুজিবুর রহমান খালেক, নাজিরপুরে অমূল্য রঞ্জন মাস্টার, ইন্দুরকানীতে মতিউর রহমান। এ ছাড়া কাউখালীতে আবু সাইদ মিয়া মনু ও নেছারাবাদে আ. হক বিজয়ী হয়েছেন। ভোলার তজুমদ্দিনে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী মোশারেফ হোসেন দুলাল, লালমোহনে আওয়ামী লীগের গিয়াস উদ্দন আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন। খুলনা বিভাগ-খুলনার অধিকাংশ উপজেলায় নৌকার বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। খুলনার ৬টি উপজেলার মধ্যে রূপসা ও পাইকগাছা উপজেলায় নৌকার প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। অপরদিকে তেরখাদা, দাকোপ, কয়রা ও দিঘলিয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। রূপসায় কামাল উদ্দিন বাদশা, পাইকগাছায় গাজী মোহাম্মদ আলী। তেরখাদায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শহিদুল ইসলাম, কয়রায় এসএম শফিকুল ইসলাম, দাকোপে মুনসুর আলী খান ও দিঘলিয়ায় শেখ মারুফুল ইসলাম বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। বাগেরহাটের ৩টি উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- মোল্লাহাটে শাহিনুল আলম ছানা, ফকিরহাটে স্বপন দাস, মোরেলগঞ্জে শাহ ই আলম বাচ্চু নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে বাগেরহাটের ৬টি উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন। ময়মনসিংহ বিভাগ-হালুয়াঘাটে আওয়ামী লীগের মাহমুদুল হক সায়েম, ঈশ্বরগঞ্জে মাহমুদ হাসান সুমন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রয়েছেন- ধোবাউড়ায় ডেভিড রানা সিসিম, ফুলপুরে আতাউল করিম রাসেল, গৌরীপুরে মো. মোফাজ্জল হোসেন খান, মুক্তাগাছায় আবদুল হাই আকন্দ, নান্দাইলে হাসান মাহমুদ জুয়েল, ভালুকায় আবুল কালাম আজাদ। তিতাসে সংঘর্ষ : কুমিল্লার তিতাসে জিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের দুই ঘণ্টার মাথায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহিনুর ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের পারভেজ হোসেন সরকারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। এ ছাড়া রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরা, কেন্দ্র দখলের চেষ্টা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আগেই ভিটিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাশকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বন্দরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ সংক্রান্ত ইসির নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
দুজনকে কুপিয়ে আহত : কুমিল্লা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বুড়িচং উপজেলার বারেশ^র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট শুরুর ঘণ্টাখানেক পর নৌকার কর্মীরা কুপিয়ে ওই কেন্দ্রের পোলিং অফিসার শেফালী আক্তার এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর (আনারস) এজেন্ট মো. হাসানকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। মুন্সীগঞ্জে গুলিতে আহত ২ : মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নে নির্বাচন শেষে প্রতিপক্ষের গুলিতে ২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে দেওয়ানবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে গজারিয়ায় তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। বাগেরহাটে সংঘর্ষ : বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়াই ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে জেলার ৪৬৮টি কেন্দ্রের প্রায় প্রতিটিতে ভোটারের উপস্থিতি খুবই কম ছিল। মোল্লাহাট উপজেলার ভাণ্ডারখোলা ভোট কেন্দ্রে সকাল ১০টায় দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ জন আহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ককটেল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, ৬টি উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সদর উপজেলার ভোট গ্রহণকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিকট শব্দে বিভিন্ন দিকে ছুটতে থাকেন ভোটাররা। এ সময় র্যাব সদস্যরা মুন্সেফপাড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় খানকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এদিকে সরাইল উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে উপজেলা সদরের একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে অন্তত ১০ বাড়ি ও দোকানপাট। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। ভোটারবিহীন কেন্দ্রে কুকুর : টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সকাল থেকে ভোটারদের দেখা ছিল না। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দেখা গেছে, ভোট কেন্দ্রে কুকুর ছাগল শুয়ে আছে। বেলা ১টা ২০ মিনিটের সময় দেলদুয়ার উপজেলার জাঙ্গালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র, বেলা ২টায় সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের সাপিয়া চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কুকুর ও ছাগল শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। এদিকে সখীপুরে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আজহারুল ইসলাম রাজা (৪২) নামে এক ইউপি সদস্য মারা গেছেন। ভোট কর্মকর্তাদের ঘুম : যশোর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, যশোরে এক ডজন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রত্যেকটি কেন্দ্রই ভোটারদের অভাবে খাঁখাঁ করছে। একটি কেন্দ্রে ভোটারের অভাবে এক কর্মকর্তাকে ঘুমাতেও দেখা গেছে। ভোটে অলস কর্মকর্তারা : খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খুলনার ৮টি উপজেলায় গতকাল ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটারদের উপস্থিতি না থাকায় এসব কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্টসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অনেকটা অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। প্রিসাইডিং অফিসার গ্রেফতার : ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ধামরাইয়ে চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালে গতকাল বাইশাকান্দা ইউনিয়নের কান্দাপটল কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে জাল ভোটের সিল মারতে সহযোগিতা করায় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার (আমছিমোর সেসিব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক) আবুল বাশার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। ফিঙ্গার ভোটারের, বাটন টেপেন কর্মীরা : ফেনী প্রতিনিধি জানান, ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে ফেনীর ৬ উপজেলার মধ্যে চার উপজেলায় চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফেনী সদর উপজেলার ইভিএমের ভোটে ফিঙ্গার ভোটাররা দিলেও মার্কার বাটন টিপেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীরা। স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাবেক যুবলীগের আহ্বায়ক আজহারুল হক আরজু এ অভিযোগ স্বীকার করেন। সকালে ভোটার নেই, বিকালে ভিড় : ভোলা প্রতিনিধি জানান, ভোলার ৩ উপজেলার সব কেন্দ্রেই সকালে ভোটার ছিল না। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়েছে। ফুলপুরে ব্যালট ছিনতাই চেষ্টা : ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহের ১২টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। শুধু ফুলপুর উপজেলার ৩টি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছে। এদিকে এবারই প্রথম ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় ১০০টি কেন্দ্রে ‘ইভিএম’ পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হয়। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া নিয়ে ভোটারদের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিটি কেন্দ্রেই সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। ভোট আছে ভোটার নেই : নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, কেন্দ্রে ভোটার আনতে চরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় মসজিদের মাইকে মাইকিংও করতে হয়েছে। জন্টু সাহা নামে এক শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে লিখেছেন, ‘ভোট দিতে গিয়া শরমে পইরা গেছি। দেহি আমিই কেবল ভোটার।’। এদিকে নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সহধর্মিণীকে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিয়ে সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সদর আসনের এমপি লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতীক) বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল।’ মোরেলগঞ্জে মুড়িবই আটক : মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শেষ মুহূর্তে বিদ্রোহী প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৬০০ ব্যালট পেপারের মুড়িবই জব্দ করেছেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. কামরুজ্জামান।