শিরোনাম
সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদ স্তিমিত হওয়ায় আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

জঙ্গিবাদ স্তিমিত হওয়ায় আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই

বেনজীর আহমেদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি ও অভূতপূর্ণ গণসমর্থনের কারণেই বর্তমান বাংলাদেশ জঙ্গিবাদমুক্ত রয়েছে বলে মনে করেন র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তাই বলে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, জঙ্গিদের ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। যে কোনো সময় তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন র‌্যাব মহাপরিচালক।

বেনজীর আহমেদ বলেন, হলি আর্টিজান পরবর্তী শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির কারণ হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি এবং বাংলাদেশের গণমানুষের সমর্থন। আসলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। তারা ইসলামের নামে খুন বা রক্তপাত পছন্দ করে না। এ কারণে এ দেশ সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদের জায়গা নয়। ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ ইসলামে বিশ্বাসী। তাই প্রধানমন্ত্রীর নীতি সামনে রেখে ও অভূতপূর্ব গণমর্থন সঙ্গে নিয়ে হলি আর্টিজান পরবর্তী পরিস্থিতি সমন্বিতভাবে উত্তরণে সক্ষম হয়েছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। তিনি বলেন, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি গ্রেফতার করেছে। র‌্যাব একাই পাঁচ শতাধিক জঙ্গি গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছে। তবে এটা মনে রাখতে হবে, আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, মূলত মধ্যপ্রাচ্যে উত্থান হওয়া জঙ্গিবাদ এখন হয়তো স্থিমিত হয়েছে। কিন্তু সেই জঙ্গিরা এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। তারা এখনো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সরব রয়েছে। বাংলাদেশকে ঘিরেও অপচেষ্টা চলছে। ভুলে গেলে চলবে না যে,  মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে বিশেষত প্রতিবেশী দেশগুলোতে এখনো জঙ্গিবাদী কর্মকা  চলছে। বাংলাদেশে তারা মাথাচাড়া দিতে পারে। তাই সাম্প্রতিক সাফল্য নিয়ে আত্মতুষ্টিতে নিমগ্ন না হয়ে দেশের সবাই মিলে জঙ্গিবাদকে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, আসলে ইসলাম কোনো ধরনের খুনোখুনি পছন্দ করে না। বরং মানুষ হত্যাকে ইসলামে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়েছে। তারপরও এক শ্রেণির মুখোশধারী মুসলমান সাম্প্রতিককালে ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশেও কিছু মানুষ এ ভুলপথে পা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানকেই তৎপর হতে হবে। সে কারণেই আমরা কাউন্টার ন্যারেটিভ তৈরি করেছি। এর মাধ্যমে আমরা কোরআনের ভুল ব্যাখ্যাগুলো ধরিয়ে দিচ্ছি। রেডিও-টেলিভিশনে সচেতনামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। বিতরণ হচ্ছে কয়েক লাখ সচেতনতামূল লিফলেট। অব্যাহতভাবে আয়োজন চলছে বিভিন্ন সভা-সেমিনারের। বেনজীর আহমেদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি যাই হোক জঙ্গিবাদ মোকাবিলা থেকে আমাদের বিন্দুমাত্র দৃষ্টি সড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ, আমরা এখন একটি উন্মুক্ত বিশ্বে বসবাস করছি। যেখানে প্রযুক্তির মাধ্যমে মুহূর্তেই বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে যোগাযোগ সম্ভব আবার হুন্ডি বা বিভিন্ন পথে যে কোনো সময় অর্থ প্রেরণও সম্ভব। তাই বৈশ্বিকভাবে জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত না হওয়া পর্যন্ত শুধু দেশে পরাস্ত করেছি বলে সন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণই নেই।  বিশ্ব থেকে ধর্মীয় উগ্রবাদ দূর হওয়ার আগ পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে যেমন সজাগ থাকতে হবে, তেমনি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।

সর্বশেষ খবর