বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ

নতুন ওষুধ আসবে কবে : হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন ওষুধ আসবে কবে : হাই কোর্ট

এডিস মশা নির্মূলে দুই সিটি করপোরেশনের ভূমিকায় আবারও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে মশা নিধনে নতুন ওষুধ কবে দেশে আনা হবে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য এফিডেভিট আকারে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। দুই সিটি করপোরেশনের আইনজীবীদের উদ্দেশে আদালত বলে, কেউ যদি জেগে ঘুমায় তাহলে তাকে জাগানো যায় না। দুই সিটি করপোরেশনের অবস্থা হচ্ছে সেই রকম। মশা নিধনের বিষয়টি আপনারা সিরিয়াসলি (গুরুত্ব) নিচ্ছেন না।

গত ২৫ জুলাই সিটি করপোরেশনের আইনজীবীরা হাই কোর্টকে জানিয়েছিলেন যে, ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে দিয়ে এডিস মশা নির্মূল করতে চায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কারণ এখন যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তাতে ¯œায়ু দুর্বল হয়ে মশা নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। কিন্তু মশা নির্মূল হচ্ছে না। ফলে ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে দিলে মশা নির্মূল হবে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিন দিন সময় দেয় আদালত।

শুনানিতে তিন দিনে উত্তর সিটি করপোরেশনের নেওয়া কার্যক্রম আদালতে তুলে ধরেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু। তিনি বলেন, মশা নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে লোকবল বাড়ানো হয়েছে। আদালত বলে, আমাদের ধারণা যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। এজন্য বিভিন্ন মহল থেকে অধিক কার্যকর ওষুধ ছিটানোর কথা বলা হচ্ছে। আপনার রাইফেল আছে, গুলি নেই, তখন রাইফেল থেকে কী লাভ? আইনজীবী বলেন, চায়না থেকে ওষুধ আনা হবে। সিটি করপোরেশন সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে মশা নিধনে। আদালত বলে, আপনাদের এই কর্মকান্ডে র জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে। আইনজীবী বলেন, সারা বছরই মশা নিধন কার্যক্রম চলে। এখন মশার প্রকোপ বেড়েছে। আদালত বলে, যদি সারা বছর কার্যক্রম চলে তাহলে প্রকোপ বাড়বে কেন? আইনজীবী বলেন, নতুন একটি ওষুধ আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ (গতকাল) হয়তো লাইসেন্সটা পেয়ে যাবে। ১/২ সপ্তাহের মধ্যে হয়তো ওষুধ চলে আসবে। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে। আদালত বলে, ভারতেও ওষুধ রয়েছে। সেখান থেকে দ্রুত ওষুধ আনা যেতে পারে।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মাইনুল হাসানকে আদালত বলে, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর বিস্তার লাভ করেছে। এ ব্যাপারে সরকার কী করছে? আমরা কি প্রত্যেক দফতরের লোকদের ডেকে এনে তাদের বক্তব্য শুনব? ডিএজি বলেন, ডেঙ্গু বর্তমানে যে আকার ধারণ করেছে তাতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। যদি এই প্রচেষ্টা গ্রহণ করা না হতো তাহলে আরও বড় আকার ধারণ করত। তবে পুরনো ওষুধ যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে না। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। আদালত বলে, অর্থমন্ত্রী বলেছেন ঢাকার মশা মারবে সিটি করপোরেশন। তাহলে দেশের মশা কে মারবে? আমরা নতুন ওষুধ কেনা নিয়ে কোনো দফতর বা বিভাগের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি দেখতে চাই না।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, বর্তমান অবস্থায় সরকার দুই সিটি করপোরেশনকে নতুন ওষুধ এনে দিলে ভালো হয়। তাহলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকবে না। আদালত জানতে চায়, ওষুধের ডোজ বাড়ানোয় কি মশা মরেছে? আইনজীবী বলেন, মনে হয় কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ফলাফল পেতে আরও সময় লাগবে। এ সময় আদালত বলে, হাসপাতালে যে হারে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছে তাতে বোঝা যায় ওষুধ কতটা কার্যকর হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর