মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ছাত্রদলকে পিটিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়া করল ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ছাত্রদলকে পিটিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়া করল ছাত্রলীগ

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মারধর করে ছাত্রলীগ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এতে ছাত্রদলের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আটজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের ঢাকা মেডিকেল ও কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে অতর্কিত এ হামলা চালানোর অভিযোগ এনেছে ছাত্রদল। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। একই ঘটনায় তিন সাংবাদিককে মারধর ও মোবাইল ফোন সেট ছিনিয়ে নিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন স্টুডেন্ট জার্নালের ঢাবি প্রতিনিধি আনিছুর রহমান, বিজনেস বাংলাদেশের আফসার মুন্না ও প্রতিদিনের সংবাদের রাহাতুল ইসলাম রাফি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকালে ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল শতাধিক নেতা-কর্মীসহ মধুর ক্যান্টিনে আসেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান শেষে হাকিম চত্বরে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেল বহর নিয়ে সেখানে আসেন সনজিত চন্দ্র দাস। তিনি ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের চলে যেতে বলেন। ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মোটরসাইকেলে শাসসুন্নাহার হলের দিকে গেলে পেছন থেকে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের ওপর রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এতে ছাত্রদল কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে টিএসসি ও মেট্রোরেলের কাছে তাদের ওপর আরেক দফা হামলা চালানো হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তাদের কারও কারও হাত-পা থেকে রক্ত ঝরতে দেখা গেছে। অনেকের প্যান্ট-জামা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে এ হামলায় অংশ নেন এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হোসেন মাহমুদ আপেল, জসিম উদ্দিন হল ছাত্রলীগের উপপ্রচার সম্পাদক মহসিন আলম তালুকদার, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আল ফারিয়াল খন্দকার, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক তারেক রহমান এলিট, কর্মী ধ্রুব ফকির, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাইসুল ইসলাম, সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জামান খান সোহান, জগন্নাথ হল সংসদের জিএস কাজল সরকার, জসীমউদ্দীন হল সংসদের জিএস ইমামুল হাসান, জহুরুল হক হলের ঢাবি শাখার সহসম্পাদক হাসান রাহাত। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী সূর্যসেন হলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শরিফুল ইসলাম শপুও হামলায় অংশ নেন। হামলার দুই ঘণ্টা পর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে আসে ছাত্রদল। পরে ঘটনার বিষয়ে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি সনজিতের নেত্বত্বে দেশি অস্ত্র, রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় সাত-আটজন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। আমরা ছাত্রদল ও সাংবাদিকদের ওপর এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমি এ ঘটনায় লজ্জিত। এ হামলায় ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে জড়িত ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগের কিছু কর্মী ঘটনায় জড়িয়েছেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এ রকম নির্দেশনা দেব।’

আহতদের পাশে বিএনপি নেতারা : ঢাবিতে ছাত্রলীগের হামলায় আহত ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের দেখতে কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা। এ সময় তিনি তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনেন এবং চিকিসার খোঁজখবর নেন। এ ছাড়া ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূরও আহত ছাত্রদল নেতাদের দেখতে হাসপাতালে যান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর