রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মুনাফাখোর লুটেরাদের মধ্যেও ঐক্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুনাফাখোর লুটেরাদের মধ্যেও ঐক্য

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর, লুটেরা ও মজুদদারদের মধ্যেও ঐক্য রয়েছে। এখন এসব দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সম্প্রতি পিয়াজ, লবণ ও চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি এই পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা করেন। গতকাল রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ত্রয়োদশ সমাবর্তনে এসব কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি পিয়াজ, লবণ ও চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদের ব্যাপারে গুজব সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদেরও এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।

পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হ্রাস পায়। এমনকি রমজান মাসে মধ্যপ্রাচ্যে পণ্যের মূল্যহ্রাস হয়। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা ভিন্ন চিত্র দেখতে পাই। এদেশে রমজান মাস এলেই ইফতারি তৈরিতে ব্যবহৃত বেগুন, শসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। জনগণকে অবশ্যই এই দুষ্কর্মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ এতে সাধারণ জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

কয়েকদিন আগে দেখলাম পিয়াজের কী ঝাল! ২৫-৩০ টাকা করে কিনে ২৫০-২৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হলো। বাঙালি আমরাও সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। এমনি সময় যদি কিনত কেউ আধা কেজি, এ সময় কিনেছে ৪ থেকে ৫ কেজি করে।

মো. আবদুল হামিদ বলেন, পিয়াজ তো পচনশীল জিনিস। ডাক্তাররা বলেন, শুধু পানি খেয়েও মানুষ ২১ দিন বাঁচে। পিয়াজ না খেয়ে কি আমরা ২৫-৩০ দিন পার করতে পারি না? আমরা সব মানুষ কি বলতে পারি না যে, এক মাস পিয়াজ খাব না? তাহলে যারা মজুদ করেছে তারা বাপ ডেকে বলবে পিয়াজ নিয়ে যাও, না হলে সব পচে যাবে। আমরা কেন এ সুযোগ নিচ্ছি না? আপনি এভাবে চিন্তা করেন যদি লবণের অভাব হয় তাহলে তো সারা দেশেই মানুষের কষ্ট হবে। আপনি কেন এক কেজির জায়গায় অন্যের কথা চিন্তা না করে দশ কেজি কিনবেন? এভাবে কেন কিনব? এখানেই মানুষের একতা নাই। গুজবের কারণেই এমন হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার অপপ্রচারের কারণে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মুনাফালোভী, লুটেরা। সবাই মিলে এদের মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের মধ্যে একতা থাকতে হবে। আমরা কি সচেতন হতে পারি না? ছাত্র-ছাত্রী, মিডিয়াকে এর জন্য এগিয়ে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বলেন, সুশিক্ষিত জাতি পারে দারিদ্র্য দূর করতে, সমৃদ্ধ দেশ গড়তে। সরকার উচ্চশিক্ষার মানের ব্যাপারে সচেতন। এ জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শিক্ষায়।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের  চেয়ারপারসন তামারা হোসেন আবেদ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ভিনসেন্ট চ্যাং।

সর্বশেষ খবর