মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

অসহনীয় বায়ু দূষণে ঢাকা

জয়শ্রী ভাদুড়ী

অসহনীয় বায়ু দূষণে ঢাকা

রাজধানীর অনেক সড়কে নাক-মুখ চেপে চলতে হয় -রোহেত রাজীব

রাজধানীতে বায়ু দূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর এখন ঢাকা। ইটভাটা, মোটরযানের কালো ধোঁয়া এবং যথেচ্ছ নির্মাণকাজে মাত্রা ছড়াচ্ছে দূষণের মাত্রা। গতকাল বায়ু দূষণের সার্বিক বিষয় পর্যালোচনায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার বায়ু ও শব্দ দূষণ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজ্যুয়ালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে গড় বায়ু দূষণের পরিমাণ ৯৭ দশমিক ১০, পাকিস্তানের ৭৪ দশমিক ২৭, ভারতের ৭২ দশমিক ৫৪, আফগানিস্তানের ৬১ দশমিক ৮০ এবং বাহরাইনের ৫৯ দশমিক ৮০ পিএম ২ দশমিক ৫। এয়ার ভিজ্যুয়াল প্রতি ঘণ্টায় বায়ু দূষণের এই তথ্য হালনাগাদ করে। বাংলাদেশে বায়ু দূষণের উৎস নিয়ে চলতি বছরের মার্চে একটি গবেষণা প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংক। গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৩ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে দেশের ইটভাটাগুলোর ওপরে একটি জরিপ করা হয়। তখন দেশে ইটভাটার সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৯৫৯টি। ২০১৮ সালে পরিবেশ অধিদফতরের জরিপে দেখা যায়, ইটভাটার সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৯০২ হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৮৭টি ইটভাটা ঢাকা বিভাগের মধ্যে গড়ে উঠেছে। ওই গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে দেশে মোট যানবাহনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৭। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৪। বায়ু দূষণ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকায় বায়ু দূষণের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভবন নির্মাণের সময় পানি ছিটানো, যন্ত্রপাতি যত্রতত্র ফেলে না রাখা ও নির্মাণের ক্ষেত্র নির্ধারিত বেষ্টনীর মধ্যে আছে কি না তা দেখতে হবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের বায়ু দূষণের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এ সমস্যা রোধে মূল দায়িত্ব পরিবেশ অধিদফতরের। ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইউটিলিটি সার্ভিস প্রকল্পের জন্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। বায়ু দূষণে বাড়ছে রোগব্যাধির আশঙ্কা। ধুলায় শ্বাসকষ্ট, হাঁচি, কাশি, ব্রংকাইটিসসহ বিভিন্ন রকমের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। গর্ভবতী মা, শিশু এবং বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ব্যাপারে ইউজিসি অধ্যাপক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন ড. এ বি এম আবদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পরিবশ দূষণ কমাতে না পারলে রোগের ঝুঁকি কমবে না। বাতাসে মিশে থাকা ধুলা, সিসা জীবনঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর রাখতে হবে। রাস্তায় বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। রাজধানীর রাস্তায় সিটি করপোরেশনকে পানি ছিটাতে হবে। তাহলে ধুলার পরিমাণ কমবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর