শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীরের নজর এখন সব সেক্টরে

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দেশের প্রতিটি সেক্টরের মানুষকে দলে ভিড়িয়ে ইসলামী খিলাফাত প্রতিষ্ঠা করতে চায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর উলাই’য়াহ বাংলাদেশ। সরকারি  বেসরকারি নানান প্রতিষ্ঠান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা কর্মচারী এবং স্কুল কলেজের মেধাবী ছাত্রদের টার্গেট করে মাঠে নেমেছে হিযবুত সংগঠকরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যে থেকেও তারা অনেকটা ‘সফল’ হয়েছে। তাদের ফাঁদে পড়ে উগ্রবাদে জড়িয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া হিযবুত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতার হওয়া হিযবুত নেতাদের জিজ্ঞাবাদ করেছেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এক সময় ছিল শুধুমাত্র মাদ্রাসা ও স্কুল ছাত্রদের টার্গেট করে কাজ করতো জঙ্গি সংগঠনগুলো। কিন্তু এবার হিযবুত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হিযবুত শুধু শিক্ষার্থী নয়, নানা শ্রেণি-পেশার লোকদের দলে ভেড়ানোর টার্গেট করে কাজ করছে। তাদের টার্গেটে আমজনতার পাশাপাশি আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনও রয়েছেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা মনে করে ইসলামী খিলাফাত প্রতিষ্ঠার পর দেশ পরিচালনা করতে সব পেশার লোকজন প্রয়োজন হবে। তাই পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা সব পেশার লোকজনকে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে।’ জানা যায়, হিযবুত তাহরীরের সংগঠকরা কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করার পর কয়েক মাস তার যাবতীয় কর্মকা  অনুসরণ করে। এরপর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেন। সম্পর্কের অজুহাতে পার্ক, রেস্টুরেন্ট, মার্কেট কিংবা খোলা মাঠে আড্ডা দেন। আড্ডার চলেই ইসলামের নানান অপব্যাখ্যা দিয়ে ‘মানসিক’ভাবে দুর্বল করে ফেলে। মগজধোলাইয়ের জন্য পড়তে দেওয়া হয় নানা বই। দেওয়া হয় ‘ছবক’। এক পর্যায়ে সাংগঠনিক বড় ভাইয়ের হাতে ন্যস্ত করা হয় টার্গেটকে। ওই বড় ভাইয়ের তত্ত্বাবধানেই চলে সাংগঠনিক ট্রেনিং। চট্টগ্রামে মাঠপর্যায়ে হিযবুত তাহরীরের বেশ কয়েকটি সাংগঠনিক ইউনিটের সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার মধ্যে চার ইউনিট প্রধানের নাম ও যাবতীয় তথ্য হাতে এসেছে তাদের হাতে। এ চার ইউনিটের প্রধানরা হলেন রিদওয়ান আহমেদ সিয়াম, আফজাল হোসেন আতিক ওরফে আকাশ, আবদুল্লাহ আল মাহফুজ এবং তাহমিদ সুফিয়ান। এ চার ইউনিটের সমন্বয় করেন আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল ইসলাম। এ চার ইউনিটে ৪০ থেকে ৫০ জন নেতা-কর্মী রয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। সম্প্রতি হিযবুত তাহরীর কর্মীদের গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘গ্রেফতার হওয়া হিযবুত তাহরীরের ওই দলটিকে টানা ছয় মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় তারা সাংগঠনিক কর্মকান্ডে অনেক পরিবর্তন এনেছে। একই সঙ্গে বৈচিত্র্য এসেছে দাওয়াতি কার্যক্রমেও।

সর্বশেষ খবর