বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম ফজলে আকবর বলেছেন, দ্য হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলায় বিশ্বের সামনে মিয়ানমারের গণহত্যা উন্মোচিত হয়েছে। রাখাইন জনগোষ্ঠীর ওপর নেমে আসা এই বর্বরতার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়াটাই সুখবর। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক ভূমিকা প্রশংসনীয়। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের (ডিজিএফআই) সাবেক এই মহাপরিচালক আরও বলেন, বাংলাদেশের অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও শুধু মানবিকতার কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। এরপর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে। কিন্তু চীন, ভারতের মতো অনেক দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সমর্থন দিচ্ছে না। তবে গাম্বিয়ার দায়ের করা এ মামলার কারণে মিয়ানমারের গণহত্যার বিচারে জনমত তৈরি হয়েছে। কানাডাসহ বিশ্বের অনেক দেশ মিয়ানমারের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। তারা বাংলাদেশের এই মানবিকতার প্রশংসা করছে। এ সমস্যা সমাধানে পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। বিচার দীর্ঘ প্রক্রিয়া। রায় পেতে হয়তো সময় লাগবে। কিন্তু মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এম ফজলে আকবর আরও বলেন, আইসিজেতে মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে নোবেলবিজয়ী সু চি যে সাফাই গাইলেন তা দুঃখজনক। একজন নোবেল বিজয়ীর কাছে এ প্রত্যাশা ছিল না। প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালীই হোক না কেন দুর্বলের পাশে দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় কূটনীতির বাইরে এ সমস্যার সমাধানে বহুমাত্রিক চেষ্টা করেছে। এ উদ্যোগের কারণে মিয়ানমারের এই গণহত্যার বীভৎসতা উঠে এসেছে। এ সমস্যার সমাধানে চীন, ভারতের মতো বৃহৎ শক্তিকে পাশে আনতে হবে বাংলাদেশের। আমাদের রোডম্যাপ তৈরি করে সব স্টেকহোল্ডারকে মানবিকতার জন্য অনুপ্রাণিত করতে হবে। আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই।