মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

কাদের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন হাতে তুলে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে সংগঠনটি। ডাকসু ভবনে হামলা ও দোতলা থেকে একজনকে ফেলে দেওয়ার ঘটনার পর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মকান্ড নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সংগঠনটির গত কয়েকটি উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ডের পর এরা কারা, কেন বারবার হামলা করা সত্ত্বেও এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে এমন উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ডে হতাশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবদুল আহাদ চৌধুরীও। মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে করা এ সংগঠনটির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুক্তিযোদ্ধারাও। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ। কোটা বিরোধী আন্দোলনের মধ্যে কোটা বাতিলের পরিপত্র জারি হলে শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের মধ্যেই তারা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে সংগঠনটি গড়ে তোলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিনকে সংগঠনটির আহ্বায়ক এবং সাবেক সড়ক ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খানকে সদস্যসচিব করা হয়। আর চলতি বছর মার্চে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পদবঞ্চিত নেতা আমিনুল ইসলামকে সভাপতি ও আল মামুনকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গঠন করেন জামাল উদ্দিন। মূলত সেই সময় থেকে এই মঞ্চের ব্যানারে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দেশের বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছিলেন। চলতি বছরের ১০ অক্টোবর গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমিনুল ইসলাম ও আল আমিনকে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেন মঞ্চের আহ্বায়ক ও মুখপাত্র জামাল উদ্দিন। এই ঘটনার পর জামাল উদ্দিন ও আসিফ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেউ নন বলে দাবি করে বক্তব্য দেন আমিনুল ও আল মামুন এবং নিজেদের প্রকৃত সংগঠন বলে দাবি করতে থাকেন। গত রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ব্যানারে যে মিছিলটি হয় এবং মিছিল শেষে ভিপি নূরসহ অন্যদের ওপর হামলা চালায় সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন আমিনুল ইসলাম ও আল মামুনের সমর্থক অংশটি। এই অংশটিকে দুর্নীতির অভিযোগে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ হারানো গোলাম রাব্বানী মদদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ. ক. ম জামাল উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ডাকসুতে হামলাকারী আমিনুল ইসলাম ও আল মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বে ছিলেন। কিন্তু তাদের নানা অপকর্ম, একে ওকে মারধরের কারণে গত অক্টোবরে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। বহিষ্কৃতরাই বার বার এমন উচ্ছৃঙ্খলকান্ড ঘটাচ্ছে। তিনি বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধ শব্দটিকে কলঙ্কিত করছে। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই সংগঠনটি করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্যও ব্যাহত এমন উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ডে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে যে সংগঠনটি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে এটা সম্পর্কে আমার ধারণাও নেই। কারা করেছে, কী তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এটাও জানি না। আর মুক্তিযুদ্ধ নাম ব্যবহার করে কেউ বিতর্ক তৈরি করবে এটা সমর্থনযোগ্য নয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর