বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
আলোচনা বাড়ছে সিটি ভোটে

সবাই না চাইলে ইভিএম ব্যবহার নয় : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘যদি সবাই বলেন, ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) দিয়ে ভালোভাবে নির্বাচন করা যায় না, তাহলে আমরা ইভিএম ব্যবহার করব না।’ এ ছাড়া বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে ‘সুফল’ পাওয়ার কারণেই নির্বাচন কমিশন একে ‘ধরে রেখেছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে যন্ত্রে ভোটগ্রহণ নিয়ে এখনো দেশে যে অনেকের আপত্তি আছে, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেই ইভিএমে টিকে আছি।’ গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং, সহকারী রিটার্নিং ও সহায়ক কর্মকর্তাদের নিয়ে দুই দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এবং স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নুরুজ্জামান তালুকদার। কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আপনারা অনেকে ইভিএমে নির্বাচন করেছেন। ইভিএমে নির্বাচন পরিচালনায় কোনো অসুবিধা নেই। এর মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ সফলভাবে করা যায়। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে কয়েকটি আসনসহ বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, আমরা সুফল পেয়েছি, তাই ধরে রেখেছি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, ইভিএম নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। ইভিএম প্রশ্নবিদ্ধ হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তিনি বলেন, ইসি আইনত স্বাধীন। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে এই স্বাধীনতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাছে বন্দী। এ জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রয়োজন। কুমিল্লা ও রংপুর নির্বাচনে আমাদের সফলতা ছিল। কিন্তু পরের বরিশাল, গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। ঢাকা সিটি নির্বাচনে বিগত তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরিতে আপনারা নিশ্চয়ই শূন্যসহিষ্ণু নীতি বা ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাবেন। এক্ষেত্রে আপনাদের শিথিলতাও সহ্য করা হবে না এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, কারও ভয়ভীতি বা কোনো ধরনের চাপের কাছে আপনারা নতিস্বীকার করবেন না। যে কোনো মূল্যে আইনানুগভাবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সফল করতে হবে। নির্বাচন ভূলুণ্ঠিত হলে গণতন্ত্রও লুণ্ঠিত হয়ে যায়। আমরা গণতন্ত্রের শোকযাত্রায় শামিল হতে চাই না। নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন একটা গ্রহণযোগ্য ও আইনানুগ নির্বাচন প্রত্যাশা করে। আর প্রত্যাশিত এই নির্বাচন করার জন্য যেদিন থেকে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, তারপরের দিন থেকে কর্মকর্তাদের ওপর সমস্ত দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আপনাদের সব কিছু করতে হবে। নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, ইভিএম একটা চ্যালেঞ্জ। যারা নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছেন তারা পুরো নির্বাচনটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবেন। তিনি বলেন, যদি ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করতে পারি, অনেক ধরনের প্রশ্নের সমাধান আমরা দিতে পারব। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে ইভিএমের কারিগরি দিক দেখার জন্য প্রতি কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর দুজন করে টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হবে। ইসি চায় একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন। কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করে কমিশনের ভাবমূর্তি। আর আপনাদের নিরপেক্ষতা যেন দৃশ্যমান থাকে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর