বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন না লক্ষাধিক আবেদনকারী

জয়শ্রী ভাদুড়ী

দীর্ঘদিন আবেদন করেও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন না লক্ষাধিক আবেদনকারী। লাইসেন্সজটের কারণে বারবার বাড়াতে হচ্ছে অস্থায়ী রোড পারমিটের মেয়াদ। স্মার্টকার্ড প্রিন্টিংয়ের জন্য ব্যবহৃত ‘ডুয়েল ইন্টারফেজ পলিকার্বনেট’ কার্ড এখনো অনুমোদিত না হওয়ায় বন্ধ রয়েছে লাইসেন্স প্রিন্টের কাজ। এ ব্যাপারে বিআরটিএ চেয়ারম্যান ড. মো. কামরুল আহসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ক্রয় কমিটির অনুমোদন হলে কাজ অনেকটা এগিয়ে যাবে। প্রতিটি ধাপ দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে। খুব দ্রুত গ্রাহকদের স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী।’ বিআরটিএ-সূত্রে জানা যায়, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে লাইসেন্স প্রিন্টের কাজ। এতে আটকে রয়েছে লক্ষাধিক গ্রাহকের ড্রাইভিং লাইসেন্স। সড়ক আইন কঠোর হওয়ায় বাড়ছে লাইসেন্স গ্রহীতাদের আবেদনের সংখ্যা। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বিআরটিএতে পরীক্ষা দিতে হয়। এরপর ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে অস্থায়ী রোড পারমিট দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর বিআরটিএর দেওয়া নির্দিষ্ট তারিখে গেলে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়। কিন্তু প্রায় আট মাস আগে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হলেও স্মার্টকার্ড দেওয়া হচ্ছে না গ্রাহকদের। দফায় দফায় শুধু বাড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী রোড পারমিটের মেয়াদ। গত মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিআরটিএ কার্যালয়ের লাইসেন্স শাখায় গিয়ে দেখা যায় অসংখ্য আবেদনকারীর ভিড়। অনেকে এসেছেন নতুন আবেদন জমা দিতে। প্রতিটি কাজের জন্য রয়েছে আলাদা সিরিয়াল। অনেকে এসেছেন ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দিতে। তবে এদের মধ্যে স্মার্টকার্ড নিতে আসা গ্রাহকের সংখ্যা বেশি। অনেকে তুলছেন স্থায়ী রোড পারমিটের কাগজ। ভবনের ১২০ নম্বর কক্ষে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার জন্য সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রায় ৫০ জন। এর সবাইকে অস্থায়ী রোড পারমিটের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। লাইনে দাঁড়ানো ফরিদুর রহমান বলেন, ‘আমাকে মোট তিনবার অস্থায়ী রোড পারমিটের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হলো। স্মার্টকার্ড দেবে বলে তারিখ দিয়ে সময় বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার লাইসেন্স দেওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ছিল ১৫ মে। এরপর সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয় ১৮ আগস্ট পর্যন্ত। সেদিন এলে সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয় ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তিনবার ঘুরিয়ে এখন আমাকে স্মার্টকার্ড না দিয়ে আবার আগামী বছরের মে মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’ বিআরটিএর তথ্যমতে, ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহারের প্রবণতা রোধে ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স চালু করা হয়। চালুর পর থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মোট ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩৮টি স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ করা হয়েছে। এই অর্থবছরে আর কোনো স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ করা হয়নি। বিআরটিএর বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, এ বছরের জুন থেকে কোনো গ্রাহককে স্মার্টকার্ড দেওয়া হয়নি। প্রিন্টিং প্রক্রিয়ার অনুমোদন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে। ১ লাখের বেশি গ্রাহকের আবেদন বিআরটিএতে জমা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর