রবিবার, ১৫ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ইতালি ফেরতদের বিক্ষোভ, পাঠানো হলো হোম কোয়ারেন্টাইনে

ভারত থেকে এলো সেই ২৩ জন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকা ইতালি থেকে একের পর এক ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসা প্রবাসীদের নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। ইতালি-ফেরত এমন শতাধিক ব্যক্তিকে নিয়ে গতকাল সকালে দেশে ফেরে এ ধরনের একটি  ফ্লাইট। ট্রানজিট পয়েন্ট দুবাই থেকে ঢাকায় আসা এমিরেটসের ওই ফ্লাইটে আসা ১৪২ ব্যক্তির সবাইকে হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর আশকোনার হজক্যাম্পে নেওয়া হয়। তাদের প্রত্যেককে সেখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিমানবন্দরে নামার পর পুলিশ পাহারায় বিআরটিসির কয়েকটি বাসে এ ব্যক্তিদের আশকোনা হজক্যাম্পে নেওয়া হয়। সেখানে তাদের স্বজনরাও ভিড় জমান। কিন্তু হজক্যাম্পে যাওয়ার পর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অনীহা দেখিয়ে হম্বিতম্বি করতে থাকেন এসব প্রবাসী। একপর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে এসে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সন্ধ্যায় হজক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় সেনাবাহিনী। ইতালি-ফেরতদের দিনভর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় হজক্যাম্পে। রাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ইতালি-ফেরত ১৪২ জনের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এখন যারা বাড়ি যেতে চাইছেন, তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে। এই ১৪২ জন বাসায় ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ থাকবেন। এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পুলিশি ব্যবস্থায় তাদের বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। তারা পথে যদি খাবারও কিনতে চান, তবে পুলিশের মাধ্যমে কিনতে হবে। তারা নিজেরা কিনবেন না। মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আজ (গতকাল) বিকালে আরও ৫৯ জন ইতালি থেকে দেশে ফিরেছেন। তাদের গাজীপুরের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে রাখা হয়েছে। আগামীকাল ১৫৫ জন আসার কথা শুনেছি।’ গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরবর্তী সময়ে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে কোনো যাত্রী দেশে এলে তাকেও বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন করা হবে। নির্দেশ অমান্যকারীর জন্য জেল-জরিমানার হুমকিও দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

ইতালি-ফেরত ছেলের সঙ্গে এলো ভাইরাস, মৃত্যু হলো মায়ের : ভারতে ইউরোপ-ফেরত সন্তানের মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে মৃত্যু হয়েছে মায়ের। দিল্লির বাসিন্দা এই নারী শুক্রবার মারা যান। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৬৮ বছর বয়সী এই নারী পশ্চিম দিল্লির বাসিন্দা। তার মৃত্যুর কারণ ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। ওই নারী নিজে বিদেশে না গেলেও তার ছেলে সম্প্রতি ইতালি ও সুইজারল্যান্ড ঘুরে দেশে ফিরেছিলেন। পরে তার দেহে নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়ে, যা থেকে মায়ের দেহেও ছড়ায়।

দিল্লি থেকে ফিরলেন ২৩ বাংলাদেশি : ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর স্বাস্থ্য ছাড়পত্র নিয়ে গতকাল বিকালে দেশে ফিরেছেন ২৩ বাংলাদেশি। ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে বেশ কয়েকজন ভারতীয়ের সঙ্গে করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের উহান থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা গেছে, কেউ করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট ‘কভিড-১৯’ রোগে আক্রান্ত নন।

সর্বশেষ খবর