বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

এপ্রিলেই বড় ধাক্কা আসতে পারে

সবাইকে সতর্ক ও অর্থনীতি গতিশীল রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিলেই বড় ধাক্কা আসতে পারে

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে যেসব চিকিৎসক রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন, তাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, শুনেছি বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না। যেসব চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন না, ভবিষ্যতে তারা চাকরি করতে পারবেন কিনা, তা ভাবতে হবে। তিনি বলেন, সেবার মানসিকতা যাদের মধ্যে নেই, তাদের চাকরিতে থাকার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে চিকিৎসক, নার্স নিয়ে আসা হবে। গতকাল গণভবন থেকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাসমূহের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সকাল ১০টায় গণভবন থেকে এই ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়। চলে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। জেলা থেকে ভিডিও কনফারেন্স পরিচালনা করেন স্ব স্ব জেলা প্রশাসকরা। ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, হবিগঞ্জের এমপি নেছার আহমেদ প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নিয়োজিত চিকিৎসকদের প্রশংসা করেন। জীবন বাজি রেখে যারা কভিড-১৯ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেন সরকারপ্রধান। তাদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা ঘোষণা করেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সে শেখ হাসিনা আরও বলেন, এ স্বাস্থ্যবিমা তাদের জন্যই, যারা করোনাভাইরাসের শুরু থেকে কাজ করেছেন। আর যারা কাজ করেননি, নিজেদের সুরক্ষায় পালিয়েছেন, যেখানে সাধারণ রোগীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে চিকিৎসা পায়নি, তারা এটা পাবেন না।

ঢাবি শিক্ষার্থী বিনা চিকিৎসায় মারা গেল কেন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমন চাকমা অসুস্থ হয়ে একাধিক হাসপাতালে গেলেও তাকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়নি। পরে তিনি চিকিৎসা না পেয়েই মারা যান। এ ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র কেন বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে? কাজেই এই রোগী যেখানে যেখানে গিয়েছে, সেখানে কোন কোন ডাক্তারের দায়িত্ব ছিল আমি তাদের নামটা জানতে চাই। রোগী কেন ফেরত যাবে? একজন রোগী দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে কেন মারা যাবে? রোগী যেখানে যেখানে গিয়েছে, সেখানে কোন কোন ডাক্তারের দায়িত্ব ছিল? তাদের নামও জানতে চাই। তাদের চিকিৎসা করার যোগ্যতা নেই। তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার প্রয়োজন আছে। কভিড-১৯ রোগ নিয়ে ভয় থাকতে পারে। কিন্তু একজন ডাক্তারের দায়িত্ব থাকে রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার। আর তাদের সুরক্ষার জন্য সবকিছু তো দিয়ে যাচ্ছি। দেশে পিপিই তৈরি করছি, বিদেশ থেকে আনছি। এখন তো বিশ্বব্যাপী এ সমস্যা। সেটা তো সবাই জানেন। এর মধ্যেও আমরা চিকিৎসকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। তার পরও কেন চিকিৎসা দেবেন না?

করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিতদের স্বাস্থ্যবিমা : চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দায়িত্ব পালনকালে কেউ আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্যবিমা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দায়িত্ব পালনকালে কেউ কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা সরকার নেবে। তাদের জন্য একটা স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা আমরা করে দেব। যারা আক্রান্ত হবে তাদের জন্য আমরা পদমর্যাযদা অনুযায়ী ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার একটা স্বাস্থ্যবিমা করে দেব। আর খোদা না করুক, কেউ যদি মৃত্যুবরণ করেন, তবে তাদের জন্য এ বিমা আমরা পাঁচ গুণ বাড়িয়ে দেব। তিনি বলেন, কভিড-১৯ প্রতিরোধে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য আমরা একটা বিশেষ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থা করে দেব। সে সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পরও যারা কাজ করেননি, নিজেদের সুরক্ষার জন্য লুকিয়ে আছেন, যেখানে রোগীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে চিকিৎসা পাননি, তাদের জন্য এ প্রণোদনা নয়। শেখ হাসিনা বলেন, এখন কেউ যদি শর্ত দেন, প্রণোদনা দিলে কাজে আসব, আমি বলব তার দরকার নেই। আগামীতে দুঃসময় আসছে। সেই দুঃসময়ে আপনারা কীভাবে কাজ করেন, তা দেখব। আগামী তিন মাস কী কাজ করেন, তা পর্যবেক্ষণ করব। এই সময়ে মানুষের জন্য সত্যি সত্যি সেবা দিলে চিন্তা করব। তবে শর্ত দিয়ে কাউকে কাজে আনব না। যাদের মধ্যে মানবতাবোধ নেই, তাদের প্রণোদনা দিয়ে কাজে আনার যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করি না।

প্রয়োজনে দেশের বাইরে থেকে ডাক্তার-নার্স আনব : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশে যারা চিকিৎসক আছেন, তারা ভয় পেয়ে চিকিৎসা না দিলে প্রয়োজনে দেশের বাইরে থেকে চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে আসব। কাজেই তারা এখন মিটিং করুক আর শর্ত দিক, ওই শর্তে আমার কিছু আসে যায় না। বরং ভবিষ্যতে তারা ডাক্তারি করতে পারবে কিনা, সে চিন্তা করতে হবে। তিনি বলেন, ডাক্তার আমাদের প্রয়োজন আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এ মানসিকতা থাকবে কেন? মানবতাবোধ হারাবে কেন? একজন রোগী এলে চিকিৎসা করতে হবে। তার জন্য নিজেকে সুরক্ষিত করা যায়। অ্যাপ্রোন পরে নিন, মুখে মাস্ক লাগান, হাতে গ্লাভস পরে নিন, স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। কিন্তু রোগী দেখুন, রোগী কেন ফেরত যাবে?

এ মাসেই বড় ধাক্কা আসতে পারে, সবাই সতর্ক থাকুন : করোনাভাইরাস নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অন্যান্য দেশ থেকে আমরা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি, তাতে আমাদের দেশেও চলতি এপ্রিলেই বড় একটি ধাক্কা আসতে পারে। এ রকমই আলামত পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের কিছু প্রতিবেদনও আমরা দেখতে পাচ্ছি। এপ্রিল মাসটি নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। কাজেই আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

অর্থনীতি গতিশীল রাখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের গতি যখন অব্যাহত, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যখন কাজ করে যাচ্ছি, ঠিক তখনই এলো করোনাভাইরাস। সারা বিশ্বে এটি প্রলয় সৃষ্টি করেছে। এজন্য সবকিছু স্থবির। এর প্রভাবটা বাংলাদেশে এসে পড়েছে। এটা পড়াও খুব স্বাভাবিক। সারা বিশ্বের ২০২টি দেশ এর ভুক্তভোগী। প্রতিনিয়ত এটা বাড়ছে। আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি এর প্রভাবে মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমাদের অর্থনৈতিক যে প্রবৃদ্ধি আমরা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলাম তাও কিন্তু থেমে গেছে। এটা শুধু আমাদের দেশ নয়, সারা বিশ্বব্যাপী। জানমাল রক্ষা করতে হবে। অর্থনীতি গতিশীল রাখতে হবে। উন্নত বিশ্ব এটা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এর জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

তালিকা ধরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে : সামাজিক নিরাপত্তার বাইরে যারা রয়েছেন, তাদেরও সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের আমরা সামাজিক নিরাপত্তায় সাহায্য দিচ্ছি, তাদের তো দিচ্ছিই, কিন্তু এর বাইরের যে শ্রেণিটা, যারা হাত পাততেও পারছে না, তাদের তালিকা করে, তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া, এ কাজটা জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজনের করতে হবে। প্রতিটি এলাকার সংসদ সদস্য, চেয়ারম্যান, মেয়র, কমিশনারদের নিয়ে কমিটি গঠন করে এ তালিকা তৈরি করতে হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে একটি ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি থাকবে। সে কমিটি আমরা ভিজিএফ, ভিজিডি যাদের দিই তাদের জন্য নয়। তাদের তো তালিকা আছেই। সবাই মিলে এ তালিকাটা এমনভাবে করতে হবে যেন সত্যিকার যার অভাব রয়েছে, কষ্ট পাচ্ছে তাদের তালিকাটা যেন হয়। তাদের কাছে যেন সাহায্যটা পৌঁছায়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন ১০ টাকা কেজি দরের চাল সারা দেশেই বিক্রি করা হবে।

স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকলেই কোয়ারেন্টাইনে : সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে বর্ডার গার্ডকে নির্দেশনা দিয়েছি, বর্ডার থেকে যারা ঢোকার চেষ্টা করবে, সেখানে তাদের আটকাবে, সেখানে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে এবং সেভাবে জায়গা ঠিক করা আছে। তিনি বলেন, সোমবার বিভিন্ন স্থলবন্দর থেকে ৭২ জনকে এনে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বেনাপোলে ৫৪, ভোমরায় ১৩, বুড়িমারীতে একজন, বাংলাবান্ধা দিয়ে চারজন প্রবেশ করেছেন। তাদের সবাইকে আমরা কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমরা এই এপ্রিল মাসে কাউকে ঢুকতে দেব না। বর্ডার গার্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ মাসটা সুরক্ষিত রাখতে পারলে আমাদের কোনো চিন্তা থাকবে না।

ওবায়দুল কাদেরকে বাইরে বের হতে নিষেধ করেছি : নোয়াখালী জেলার সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আপনাদের সঙ্গে থাকতে পারতেন। কিন্তু তাকে বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আমি তাকে বাইরে বের হতে না করেছি।

খাদ্যাভাব দেখা দেবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে : মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মাটি আছে, মাটি উর্বর। এখন অনেকে বেকার বসে আছেন গ্রামে চলে গেছেন। কারও ঘরে এতটুকু মাটি যেন অনাবাদি না থাকে। ফলমূল, শাকসবজি, শস্য লাগান, যা পারেন কিছু না কিছু লাগান। কিছু কিছু উৎপাদন করেন। এই যে করোনা প্রভাব এতে ব্যাপকভাবে খাদ্যাভাব দেখা দেবে বিশ্বব্যাপী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল, সে রকম অবস্থা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকলে অন্যদের সাহায্য করতে পারব। এটা মনে রেখে আমাদের সবার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

সরকারি অর্থ নয়ছয় করলে কাউকে ছাড় নয় : সরকারি অর্থ নয়ছয় করলে কাউকে ছাড় নয়- এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখা যায় এ ধরনের দুঃসময় এলে কিছু লোক ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে। তারা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে। মানুষের দুর্ভাগ্যের সময় কেউ যদি নিজেদের সৌভাগ্য আনতে চায় বা টাকাপয়সা কামাতে চায়, আমাদের এই কষ্টের টাকার যদি কেউ নয়ছয় করে বা কেউ যদি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়, তারা কিন্তু ধরা পড়ে যাবেন। লুকাতে পারবেন না, লুকানো যায় না। তাদের একটুও ছাড় দেব না, এটাই স্পষ্ট। এ সময় বিত্তশালীদের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

করোনা নিয়ে কিছু লুকাবেন না, পরীক্ষা করাবেন : এপ্রিল মাসটা দুঃসময়ের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে বলব কারও যদি কোনো ভাইরাসজনিত এতটুকু অসুস্থতা দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে খবর দেবেন। চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ লুকাতে যাবেন না। কারণ একজন লুকালেন তো আপনি ১০ জনকে সংক্রমিত করলেন। এটা কোনো লজ্জার বিষয়ও নয়।

ডেঙ্গুর প্রকোপ আসছে, মশার উপদ্রব ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব যেন না হয় : চট্টগ্রাম জেলার সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরকে উদ্দেশ করে বলেন, সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আসছে, মশার উপদ্রব ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব যেন না হয়, সেজন্য আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। জবাবে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনাকে আশ্বস্ত করছি, গত বছর দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ছিল। কিন্তু আমরা যথাযথ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করায় চট্টগ্রামে সেটি হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘এ বছরও আমরা আপনাকে নিশ্চিত করে বলতে পারি, মশক নিধনে তিন দিন আগে থেকে ওষুধ ছিটাচ্ছি। আগামী ১০ দিনের মধ্যেই এটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সহায়তায় আমরা চট্টগ্রামকে ডেঙ্গুমুক্ত রাখব।’

সব শিশু যেন হামের টিকা পায় : খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, সেখানে হামে আক্রান্ত হয়ে শিশুরা কীভাবে মারা যায়? ওখানে কি হামের টিকা দেওয়া হয় না? জবাবে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন জানান, কুসংস্কারের কারণে অনেকেই এ টিকা নিতে চায় না। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এখন থেকে হামের টিকা যেন সবাই পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি নিজ দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঠে থেকে মানুষকে সচেতন করার নির্দেশ দেন তিনি।

শবেবরাতে আল্লাহ যেন করোনামুক্ত বাংলাদেশ দেন : শবেবরাতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঘরে বসে নামাজ পড়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসী জানেন যে, মক্কা শরিফ, মদিনা শরিফ এখন বন্ধ। সেখানে কারফিউ দেওয়া হয়েছে। মক্কা শরিফ, মদিনা শরিফেই যখন এ অবস্থা সেখানে মসজিদে গিয়ে অনেক লোক একসঙ্গে জমায়েত হওয়া- এটাতে কিন্তু সংক্রমণ হওয়ার একটা ভয় থাকে। সামনে শবেবরাত। সবাই যাতে ঘরে বসে ইবাদত করেন। আল্লাহকে যে কোনো জায়গা থেকেই ডাকা যায়। সবাই আল্লাহকে ডাকুন। এবারের শবেবরাতে আল্লাহ যেন লেখেন যে, করোনা থেকে মুক্তি পাই। সবাই সে দোয়াটা করবেন। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমি এ আহ্বান জানাই। আল্লাহ অন্তত বাংলাদেশটা যেন রক্ষা করেন।

সর্বশেষ খবর