সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
বোরোর বাম্পার ফলন

সুনামগঞ্জের হাওরে বিপুল উৎসাহে ধান কাটা শুরু

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের হাওরে বিপুল উৎসাহে ধান কাটা শুরু

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। ফলন বাম্পার হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে রয়েছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। করোনাভাইরাসজনিত কারণে সৃষ্ট শ্রমিক সংকট ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে এক মাসের মধ্যে হাওরের সব ঘরে তোলা সম্ভব। শনিবার জেলার বিভিন্ন হাওরে ৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার ধুম পড়ে যাবে।

কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধানের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এবার  জেলায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সদর উপজেলার কাংলার হাওরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাওরে নিচু এলাকায় আবাদ করা দেশি ও ব্রি-২৮ জাতের ধান বিক্ষিপ্তভাবে কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। হাওরজুড়ে আধাপাকা ধানের সমাহার। হাওরের পাড়ে ধান মাড়াই ও শুকানোর জন্য কিষান-কিষানিরা ব্যস্ত খলা তৈরির কাজে। বিরামপুর গ্রামের কৃষক মমিন মিয়া বলেন, ‘এই বছর বোরো ধানের ফলন ভালা অইছে। আইজ থাকি কেউ কেউ কাটা শুরু করছে। পুরাদমে কাটা শুরু করতে আরও চার-পাঁচ দিন লাগব।’ রঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকরা ধান কাটতে উৎসাহিত হচ্ছেন না। যারা কাটতে ইচ্ছুক তারা অধিক মজুরি দাবি করছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন ও পরিষদের পক্ষ থেকে  শ্রমিকদের বোঝানো হচ্ছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি খুব একটা থাকে না।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. সফর উদ্দিন বলেন, ‘এবার হাওরে বোরা ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলা চলে। শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে সব ধান ঘরে তোলা সম্ভব। এমনটা হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।’ এদিকে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের কৃষকরা যেন বছরের একটিমাত্র ফসল বোরো ধান নিরাপদে-নির্বিঘেœ ঘরে তুলতে পারেন সে লক্ষ্যে নানা ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রশাসনকে কৃষিশ্রমিকদের তালিকা সরবরাহ, অসুস্থ হলে চিকিৎসককে জানানো, দুর্গম হাওরে কৃষিশ্রমিকদের রাতযাপনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহারের সুযোগ, কৃষি যন্ত্রপাতির দোকান বন্ধের আওতামুক্ত, বাইরের জেলা থেকে শ্রমিক না আনা ইত্যাদি।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর পাশাপাশি এ মুহূর্তে হাওরের বোরো ধান নিরাপদে ঘরে তুলে আনাকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। এ লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর