মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ধানকাটা ও পণ্যবাহী গাড়ি ঠিক রাখার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধানকাটা ও পণ্যবাহী গাড়ি ঠিক রাখার আহ্বান

গণপরিবহন বন্ধ থাকার মধ্যেও শ্রমজীবী মানুষ ধান কাটার কাজ করতে পারা এবং পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল ঠিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গণভবন থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আট জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণভবন প্রান্তে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উৎপাদিত পণ্য সরবরাহের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। কোনো বাজারে যেন কোনো জিনিসের অভাব না হয়। বড় খোলা জায়গায় যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে হাট-বাজার পরিচালনা করতে হবে। রমজানে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, এখন ধান কাটাও শুরু হয়ে গেছে। আমাদের শ্রমিকরা যেন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। গার্মেন্টশিল্প চালু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা সত্য যে কিছু কিছু শিল্প আছে যাদের পণ্য রপ্তানি হবে। এজন্য আমাদের লক্ষ্য আছে কিছু কিছু খোলা রাখা। আর কিছু কিছু চালু করতেই হবে। বিশেষ করে আমাদের ওষুধ শিল্প, অ্যাপ্রোন থেকে শুরু করে, হেড ক্যাপ, সু-ক্যাপ এগুলো যারা তৈরি করছে, তাদের জন্য খোলা রাখতেই হচ্ছে। যেসব মালিক কারখানা খুলতে চান, তারা স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে কীভাবে শ্রমিকদের সুরক্ষা দেবেন তা আলোচনা করে ঠিক করতে পারেন। কারখানার মধ্যে কোনো ফাঁকা জায়গা থাকে সেখানে যদি তাদের থাকার ব্যবস্থা করা যায়, যেখানে তারা সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত হবে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জায়গা যেখানে আছে তারাও সেখানে সেই ব্যবস্থা করতে পারে। প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের কত পার্সেন্ট আসতে চায় তা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। তাদের আনতে হলে আনার ও থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। তারা যেন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় থাকতে পারে। তাহলে তারা এটা চালু করতে পারবে। এই জিনিসটা আপনাদের দেখা উচিত এবং সেভাবে আলোচনা করা উচিত। এটাও ঠিক সামনে রোজা সবাইকে একেবারে বন্ধ করে রাখতে পারব না। আস্তে আস্তে কিছু কিছু জায়গায় উন্মুক্ত করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্বব্যাপী যে খাদ্য মন্দা সৃষ্টি হবে, আগামীতে হয়তো বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা যদি খাদ্য উৎপাদন করে আমাদের মজুদ রাখতে পারি তাহলে আমরা সেই দুর্ভিক্ষে পড়ব না বরং আমরা অনেককে সাহায্য করতে পারব। আমাদের সেই ব্যবস্থা এখন থেকে নিতে হবে। ইনশাআল্লাহ আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব হবে না। তিনি বলেন, দুর্যোগ আসে, দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। দুর্যোগ এলেই সেখানে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। সাহসের সঙ্গে সেটি মোকাবিলা করতে হবে। আমরা এ দুর্যোগ থেকে খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসতে পারব।

ধান সংগ্রহের ঘোষণার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সাধারণত বোরোতে আগে আমরা যা নিতাম তার থেকে অনেক বেশি এখন নিচ্ছি। এখন আমরা ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আতপ এবং ৮০ হাজার মেট্রিক টন গমসহ সর্বমোট ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য সংগ্রহ করব।  গাজীপুরে করোনা প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গাজীপুরে এই রোগের প্রাদুর্ভাবটা খুব বেশি দেখা দিচ্ছে। আপনাদের চিন্তা করতে হবে ২৪ বা ২৫ তারিখে চালু করা ঠিক হবে কিনা। এটা বুঝে নিয়েই শিল্প খোলার কথা বা সুরক্ষার কথা ভাবতে হবে। তবে বলব না যে একদম বন্ধ থাকুক। সীমিত আকারে সেই পরিমাণ শ্রমিক আসতে হবে। তারা সেভাবে চালু করতে পারবে। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এটা ঠিক করতে হবে। নেতাদের (গার্মেন্ট মালিক) সঙ্গে আমি এ বিষয়ে বসব কথা বলব।

করোনাভাইরাসের ব্যাপারে সবাইকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এপ্রিল মাসটা আমাদের জন্য কঠিন হবে। ভাইরাসটি ছড়ানোর একটা সংক্রমণ প্রবণতা আছে। আমরা আগেই সতর্ক করেছি। এপ্রিল মাসে আরেকটু সতর্ক থাকার দরকার। এই মাসে প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে করোনায় ১৫০ বাংলাদেশি মারা গেছেন। যুক্তরাজ্যেও চিকিৎসকসহ অনেক বাংলাদেশি মারা গেছেন। এ ক্ষেত্রে যদি বাংলাদেশের কথা বলি সারা বিশ্বে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। এপ্রিল পর্যন্ত আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি। আরেকটু সতর্ক হলে আরও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমরা শুরু থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছি। এ জন্য করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব এখন আতঙ্কিত। অতীতে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ। মক্কা ও মদিনা শরিফ এবং ভ্যাটিকানের দিকে দেখুন। মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডার একই অবস্থা। অদ্ভুত একটি দৃশ্য, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মাটি উর্বর, মানুষ অনেক কর্মঠ, বাংলাদেশ খাদ্যে এখন উদ্বৃত্ত। কারও এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। সেদিকে দৃষ্টি দেবেন। যে যা পারেন কিছু চাষ করেন। ধান কাটার পরে নতুন আরেকটা ফসল কি করা যায় আমাদের সেটা করা উচিত।  তিনি বলেন, সবাই নির্দেশনা মেনে চলুন। নিজে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি অপরকে সুরক্ষিত রাখুন। এ ভাইরাস যাতে না ছড়ায় সেজন্য সবাই সতর্ক থাকুন। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় এখনো বাংলাদেশের অবস্থা ভালো। সরকারপ্রধান বলেন, জনকল্যাণ বিবেচনায় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ রয়েছে। কিন্তু জীবন থেমে থাকবে না। যারা বাজারে যাবেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করবেন। এ ভাইরাসের কারণে দুর্ভিক্ষ আসতে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা মোকাবিলায় সবাইকে কৃষিতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে সাধারণ মাস্ক দেওয়া নিয়ে আলোচনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে নির্দেশনা দিয়েছেন। রাজধানীতে কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত মহানগর জেনারেল হাসপাতালে ভুল মাস্ক সরবরাহের বিষয়টি তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহানগর হাসপাতালে কিছু জিনিস গেছে, পিপিইর নাম দিচ্ছে বেশ ভালো। কিন্তু জিনিসগুলো বোধহয় ঠিকমতো যায়নি। এটা একটু আপনাদের খোঁজ করে দেখা উচিত।

পরে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ ব্যাখ্যা দিতে গেলে তাকে থামিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এন-৯৫ লেখা আপনাদের বক্সে। কিন্তু ভিতরের যে জিনিসটা, সেটা সঠিক থাকে কিনা, এটা একটু আপনাদের দেখা দরকার। আপনারা দিয়ে দিচ্ছেন, বলে দিচ্ছেন। কিন্তু যারা সাপ্লায়ার, তারা ঠিকমতো এটা দিচ্ছে কিনা বা সঠিক জিনিসটা কিনছে কিনা, এটা দেখা দরকার। এটা দেখবেন। যেহেতু আমি ...বেশি কিছু করতে চাই না, আমি মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি ছবিটা, ওটা যাচাই করে দেখার জন্য। এটা একটু নজর দিয়েন। এখানে যেহেতু অনেকে লাইভে আছেন, আমরা কথা বলছি না। লেখা আছে এন-৯৫। কিন্তু ভিতরের জিনিস কিন্তু সবসময় সঠিকটা যাচ্ছে না।

মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে নজরদারি কঠোর করার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা যাদেরকে এনগেজড করেন, যাদেরকে ব্যবসাটা দেন বা সাপ্লাই দেয়, তারা সঠিকটা দিল কিনা, বক্স তো ঠিক আছে, কিন্তু বক্সের ভিতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা আমার মনে হয়, নজরদারি বাড়ানো দরকার। যিনি রিসিভ করবেন, তিনি যেন দেখেশুনে এটা রিসিভ করেন। ঢাকা ও আশপাশের কারখানায় নিয়োজিত পোশাক কর্মীদের গ্রামের বাড়ি থেকে ডেকে আনা ঠিক হয়নি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সুপারভাইজারকে দিয়ে শ্রমিকদের ফোন করানো হলো। এভাবে শ্রমিকদের ডেকে আনা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। মাইলের পর মাইল হেঁটে এসেছে। অনেক বাবা তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। গাড়িঘোড়া বন্ধ ছিল। শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা যেমন করা হবে, নেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। আসছে রমজানে যাতে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের ধান কেটে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা ধান কাটতে অন্য এলাকায় যেতে চান তাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তিনি। ভাতা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে এক কোটি করা হয়েছে। ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, দুস্থ ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ। ত্রাণ বিতরণে সরকারের পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আবারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্রলীগের প্রশংসা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমরা ছাত্রলীগকে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে বলেছিলাম। নিজ নিজ এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কৃষকদের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে। তারা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হ্যান্ডস্যানিটাইজার বানিয়েছে। তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিতরণও করেছে। এ জন্য ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ছাত্রলীগের পাশাপাশি কৃষক লীগ, যুব লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী সেখানকার পেশ ইমাম মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদের কথা শোনার ইচ্ছা পোষণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানকার শোলাকিয়ায় ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত হয়। এবার তো আমরা জামাত করতে পারব না। এবার ঈদের নামাজও তো আমরা করতে পারব না। সেজন্য উনার কাছ থেকে একটু শুনি।

বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়ে ইমাম প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আপনি যে চিন্তা ও গবেষণা করেন তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেন। অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রনায়করা যেখানে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না সেখানে বাংলাদেশ থেকে আপনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছেন। আপনি সুস্থ থাকলে বাংলাদেশ সুস্থ থাকবে। আগামী শুক্রবার রমজানের চাঁদ ওঠার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে ইমাম বলেন, রমজানের চাঁদ ওঠার পরে আপনার যে নির্দেশনা থাকবে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করব।  

হাওর বিল খ্যাত কিশোরগঞ্জে ব্যাপক পরিমাণে ধান উৎপাদনের দিকটির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে কিশোরগঞ্জে এত ধান হয়। সেখানে বোধহয় কোনো রাইস মিল নেই! আধুনিক রাইস মিল বোধ হয় কেউ করেনি? করা আছে? কারও আছে ওখানে রাইস মিল। এর জবাবে জেলা প্রশাসক এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ‘না স্যার...না আপা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে তা না, আসলে সেটা না। ওই কিশোরগঞ্জের মানুষ কিশোরই থেকে গেছে। তারা চিন্তাই করে নাই, যে একটা রাইস মিল লাগবে। বা কিছু লাগবে। ইউনিভার্সিটি করা? তারপরে হাওরে মাছ ওঠে, তার জন্য হ্যাচার্ড তৈরি করা অর্থাৎ মাছ যে ধরে রাখা, একটা বরফ কল ছিল না। তো আমি এ জন্য বললাম, কিশোরগঞ্জ একদিকে কিশোর থেকে গেছে, আবার ওদিক থেকে দেখা গেল, কিশোরগঞ্জ তো রাষ্ট্রপতির জেলা।

 তিনি বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ থেকেই স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেব, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসাবে যুদ্ধ পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলেন। এরপর জিল্লুর রহমান সাহেব রাষ্ট্রপতি, এখন হামিদ সাহেব রাষ্ট্রপতি; মানে কিশোরগঞ্জ হলো রাষ্ট্রপতির জেলা। সে জন্য কিশোরগঞ্জ মনে করে আমরা তো রাষ্ট্রপতি; এটাও আবার একটা বিষয় আছে। এ জন্য বোধহয় কিছুই হয় না’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যাই হোক আমার মনে হয়, অনেক ব্যবসায়ী আছেন; একটা আধুনিক রাইস মিল যদি করা যায়, তাহলে এই কৃষকরাও যথাযথ দাম পাবেন, আর এই ফসলটাও আমরা রাখতে পারব। তাছাড়া আপনারা জানেন যে, কয়েকটা নতুন সাইলো তৈরি করছি। যেমন সান্তাহারে আমরা করেছি। যার ফলে তিন বছর পর্যন্ত চাল সেখানে ভালো থাকবে। সেখানে ছিলিং সিস্টেম আছে।’ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর