প্রাণঘাতী করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে বিএনপি। বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কমিটি হচ্ছে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরাম। বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, সরকার সহযোগিতা না নিলেও বিএনপি এক্ষেত্রে ইতিবাচক অবস্থানে থাকবে। পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি ও ত্রাণ বিতরণে নানা অনিয়মের চিত্রও তুলে ধরবে দলটি। যত দিন এ সংকট চলবে তত দিন কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে নিজেদের সাধ্যমতো গরিব ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। একইভাবে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সব কর্মকা স্থগিত থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। স্কাইপে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য দিয়েছেন।
জানা যায়, লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং অন্যরা নিজ নিজ বাসভবন থেকে স্কাইপে যুক্ত হন। বৈঠক চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা। এতে করোনা পরিস্থিতিতে দলের করণীয়, সরকারকে সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বক্তব্য দেন। এ সময় দলের নীতিনির্ধারকরা দলীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ত্রাণ বিতরণে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা বর্তমান এই দুঃসময়ে সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু সরকার কোনো রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা নিচ্ছে না। তারা পরিস্থিতি নিজেরাও সামাল দিতে পারছে না। বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দলগুলো এখন মতভেদ ভুলে এক কাতার হয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ। বৈঠকে অংশ নিয়ে স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিএনপিরও এক সুরে কথা বলা উচিত। কারও এমন কোনো কথা বলা উচিত নয়, যাতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এ সময় সবাই একমত হন, হাইকমান্ড নির্ধারিত ব্যক্তিই করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেবেন। কেউ যেন বিতর্কিত কোনো বক্তব্য না দেন সে ব্যাপারেও সবাইকে সজাগ থাকতে বলা হয়।বৈঠক সূত্র জানায়, রমজানে বাজার পরিস্থিতি কী হয় সে ব্যাপারে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সজাগ থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। বাসা থেকেই তারাবির নামাজ আদায় করতে বলা হয়। সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা যেন বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে না বের হন সে ব্যাপারেও দায়িত্বশীল নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। করোনো পরিস্থিতিতে কেউ যেন কোনো কমিটি নিয়ে কাজ না করেন, সে ব্যাপারেও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়।