মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

মৃত্যু ও আক্রান্ত কমছে

স্বস্তি ফিরে আসছে বিশ্বে

প্রতিদিন ডেস্ক

মৃত্যু ও আক্রান্ত কমছে

অবশেষে সুখবর আসা শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাসের তা-ব গত তিন দিনে অনেক কমে এসেছে। কমেছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এতে করে পৃথিবীতে স্বস্তি ফিরে আসার আবহ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, কয়েক দিন ধরে করোনায় মৃত্যু ২০ লাখ পেরিয়ে ২১ লাখে পৌঁছাতে পারেনি। একইভাবে বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যাও আগের মতো লাফিয়ে বাড়েনি। বর্তমানে তা ৩০ লাখের ঘরে রয়েছে। ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। অনেক দিন ধরে ছয় হাজারের বেশি করে দৈনিক মৃত্যু হচ্ছিল, সেখানে গত রবিবার বিশ্বে মৃত্যু হয় ৩ হাজার ৭৫১ জনের। এমন সংখ্যায় আশা দেখছেন বিশ্ববাসী। সূত্র বলছে, একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ হাজারের বেশি মানুষ। এ ছাড়া একদিনে বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪২ হাজারের বেশি করোনা রোগী। রবিবার পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখ ৬ হাজার ৯১৫ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ২৬২ জন। অপরদিকে ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৪১১ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে এই মহামারী শুরু হলেও এখন ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে রবিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হন ৯ লাখ ৮৭ হাজার ১৬০ জন এবং মৃত্যু হয় ৫৫ হাজার ৪১৩ জনের। সুস্থ হন ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮১ জন। আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন। সেখানে এদিন পর্যন্ত আক্রান্ত হন ২ লাখ ২৬ হাজার ৬২৯ জন এবং মৃত্যু হয় ২৩ হাজার ১৯০ জনের। মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ৬৪৪ জনের।

আক্রান্ত-মৃত্যু দুই-ই কমেছে যুক্তরাষ্ট্রে : গত রবিবার ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ৫০৯ জন। অপরদিকে একদিনেই মৃত্যু হয় ১ হাজার ১৫৭ জনের। তবে আগের দিনের তুলনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল কম। এর একদিন আগেই করোনায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ৪১৯ এবং মারা যান ২ হাজার ৬৫ জন।

ব্রিটেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা কমেছে : যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি জানান, ব্রিটেনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা কমে এসেছে। গত এক মাসের মধ্যে গত রবিবার সর্বনিম্ন মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল কেয়ার। এদিন গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৪১৩ জনের।

নিউজিল্যান্ড থেকে করোনার বিদায় : নিউজিল্যান্ড করোনা রোগের কমিউনিটি সংক্রমণ বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছে। এ কারণে তারা কার্যকরভাবে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক অঙ্কে নেমে আসে দেশটিতে, রবিবার নতুন করে মাত্র একজন আক্রান্ত হন। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, তার দেশ এখনকার মতো ‘এ যুদ্ধে জিতেছে’।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লকডাউন তুলে নেওয়া হলেও বেশিরভাগ মানুষেরই এখনো সারাক্ষণ বাড়িতেই থাকতে হবে এবং সব ধরনের সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন সরকারি ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালু করছি, কিন্তু মানুষের সামাজিক জীবন এখনই আবার চালু করা হচ্ছে না।’

উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ১ হাজার ৫০০-এর কম মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১৯ জন মারা  গেছেন।

নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অ্যাশলি ব্লুমফিল্ড বলেছেন, গত কয়েক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে আসায় ‘করোনাভাইরাস দূর করার জন্য সরকার যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, তা আমরা অর্জন করতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস। নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক হারে অ-শনাক্তকৃত কোনো কমিউনিটি সংক্রমণ নেই।  সে যুদ্ধে আমরা জিতেছি। কিন্তু আমাদের যেন অবস্থাটা এমনই রাখতে পারি সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী মিস আরডার্ন বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পর পরই যদি দ্রুত লকডাউন না দেওয়া হতো, তাহলে দিনে এক হাজারের ওপর নতুন রোগী শনাক্ত হতো। পরিস্থিতি কত খারাপ হতে পারত কেউ জানে না, কিন্তু আমাদের আগাম পরিকল্পনায় আমরা সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর