মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
সিঙ্গাপুরের গবেষণা

বাংলাদেশে ১৯ মের মধ্যে করোনা বিদায় নেবে ৯৭ শতাংশ

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস বিদায় নেওয়া শুরু করবে মধ্য মে মাসে, ভারতে জুলাইয়ে এবং সারা বিশ্বে ডিসেম্বরে। এমন তথ্য দিয়ে গতকাল একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি অ্যান্ড ডিজাইনের (এসইউটিডি) ডেটা ড্রাইভেন ইনোভেশন ল্যাবের গবেষকেরা।

এই গবেষকরা পূর্বাভাস দিয়ে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে এ ভাইরাসটির ৯৭ শতাংশ ১৯ মের মধ্যে, ৯৯ শতাংশ ৩০ মের মধ্যে বিলীন হয়ে যাবে। ভাইরাসটি বিস্তারের ধরন, মানবদেহে ক্ষতিকর প্রভাব ও বৈশিষ্ট্য, সব মিলিয়েই গবেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ভাইরাসটির পুরোপুরি বিদায় নিতে ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় গড়াতে পারে। সারা বিশ্ব থেকে করোনা পুরোপুরি বিদায় নিতে পারে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে। সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি অ্যান্ড ডিজাইনের (এসইউটিডি) ডেটা ড্রাইভেন ইনোভেশন ল্যাব তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ১৩১টি দেশের করোনাবিষয়ক তথ্য তুলে ধরে বলেছে, তারা তাদের এসইউটিডি গবেষণায় সাসসিপটাবেল ইনফেকটেপ রিকভারড (সার) মডেল ব্যবহার করেছেন। এ মডেল অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমার প্রমাণ মিলছে। গবেষকদের দাবি, সার এপিডেমিক মডেল বলছে, বিভিন্ন দেশ থেকে পাওয়া তথ্যে ও করোনাভাইরাসের জীবন চক্রের মেয়াদ সম্পর্কে প্রচুর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছনো হয়। এসইউটিডির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ভারতে করোনার সংক্রমণ ২১ মের মধ্যে ৯৭ শতাংশ কমে যাবে। বিশ্ব থেকে করোনাভাইরাস ৯৭ শতাংশ দূর হবে ২৯ মের মধ্যে এবং পুরোপুরিভাবে চলে যাবে চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রে ১১ মের মধ্যে করোনার সংক্রমণের প্রকোপ ৯৭ শতাংশ কমে যাবে। ইতালিতে ৭ মের মধ্যে কমবে ৯৭ শতাংশ সংক্রমণ। ব্যতিক্রম থাকবে আরব দুনিয়ার বাহরাইন।

 সেখানে করোনার প্রভাব সম্পূর্ণ শেষ হতে আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাস এসে যাবে।

প্রায় প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রেই আলাদা করে এ রকম রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাতেই দাবি করা হয়েছে, এখন পৃথিবীর মধ্যে করোনার প্রভাব সব থেকে বেশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে করোনা আগে হানা দিলেও খুব শিগগিরই তা বিদায় নিচ্ছে না। এমনকি মার্কিন মুলুক থেকে এ ভাইরাস একেবারে বিদায় নিতে আগস্ট হয়ে যাবে। একইভাবে ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, তুরস্ক, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কানাডা, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, আর্মেনিয়া, ফিনল্যান্ড, বেলারুশ, সিঙ্গাপুর, আফগানিস্তান, জার্মানির মতো দেশও আমেরিকার আশপাশ দিয়েই সম্পূর্ণ করোনামুক্ত হবে আগস্টে। করোনা প্রভাবিত ইউরোপের আরও দুই দেশ সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের করোনামুক্তি যথাক্রমে জুলাই ও সেপ্টেম্বরে ঘটতে পারে। ইরানে এর প্রভাব শেষ হতে অক্টোবর চলে আসবে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা হবে সেপ্টেম্বর।

গবেষকদের কথায়, দেশগুলোয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কত, কী হারে তা রোজ বৃদ্ধি পাচ্ছে, কত রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, কী হারে মানুষ সুস্থ হচ্ছে- প্রভৃতি একাধিক তথ্যকে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেই ভিত্তিতেই রিপোর্ট প্রস্তুত হয়েছে। তবে এরই পাশাপাশি নিয়মিত পরিসংখ্যানের দিকে নজর রাখছেন তারা। প্রতিনিয়ত দুনিয়াভর পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। দিনকয়েক আগেও যেভাবে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছিল, তাতে কিন্তু লাগাম পরানো গেছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা কমছে। এভাবেই যদি পরিস্থিতি বদলাতে থাকে, তাহলে পরিসংখ্যানেও বড়সড় রদবদল হবে। তখন রিপোর্ট একই রকম নাও থাকতে পারে। বদল আসতে পারে। গবেষকদের কথায়, লকডাউনসহ আমাদের অভ্যাস এ পরিসংখ্যানে বড়সড় প্রভাব ফেলেছে। তাই সেগুলোও কতটা বজায় থাকছে, তা দেখা দরকার। কারণ, পৃথিবীজুড়ে মার্চের শেষ থেকে যে পর্যায়ক্রমে লকডাউন চলছে, তার ফলে সমাজে একটা পরিবর্তন এসেছে। তার ওপর ভিত্তি করেই বর্তমান পরিসংখ্যান। অর্থাৎ ভবিষ্যতে যদি তাতে বড়সড় পরিবর্তন হয়, তাহলে করোনার চিত্রটাও বদলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে রিপোর্ট তৈরি হবে।

 

সর্বশেষ খবর