মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
৫৫ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

ডাক্তার হয়রানি ও কিট অনুমোদনে অনীহায় উদ্বেগ প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মধ্যেই ‘চিকিৎসকদের হয়রানি এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের পরীক্ষা ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় সরকারের অনীহায়’ উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫৫ জন নাগরিক। বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রাখা অধ্যাপক, চিকিৎসক, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী, নারী আন্দোলন কর্মী, শিল্পী ও আলোকচিত্রী রয়েছেন। তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে কভিড-১৯ এর সংক্রমণের দ্রুত বিস্তার রোধে সরকারের প্রতিকার এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সীমাবদ্ধতা দেশের মানুষকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই সীমাবদ্ধতা আরও ব্যাপকতা পেয়েছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের নেওয়া নিবর্তনমূলক পদক্ষেপের কারণে এবং সমাজভিত্তিক গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লি. কিটের পরীক্ষা, অনুমোদন ও উৎপাদনের অনুমতি প্রদানে সরকারের অনীহা এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জনসম্মুখে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ করে হেয় প্রতিপন্ন করার মাধ্যমে।’ বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নার্সদের বলে দেওয়া হয়, উচ্চতর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া প্রকাশ্যে বা গণমাধ্যমে তাদের মতামত জানানো থেকে বিরত থাকতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে যুক্ত হয়ে একই কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর মধ্যেই নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক মেডিকেল অফিসারের ফেসবুক পাতার স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দফতর থেকে কারণ দর্শানো নোটিস জারি করে অভিযোগ করা হয় যে এই চিকিৎসক স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য বিভাগ সম্বন্ধে শিষ্টাচারবর্জিত শব্দ প্রয়োগ করে তাদের অভিযুক্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। পরবর্তীতে ওই চিকিৎসক সম্পূর্ণ অভিযোগ অস্বীকার করেন, তার ভাষ্য- স্ট্যাটাসটি ছিল ‘জীবন বাঁচানোর জন্য আবেদন মাত্র’।

এর মধ্যে আবার জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন ও তার উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন তারা।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন : সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক; অধ্যাপক পারউইন হাসান, ভাইস-চ্যান্সেলর, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি; অধ্যাপক আকমল হোসেন, শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক আহমেদ কামাল, শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম (এএলআরডি); ডা. নায়লা জামান খান, অধ্যাপক, ঢাকা শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরোসায়েন্স; শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী, লেখক; অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক মেঘনা গুহঠাকুরতা, গবেষক; ফরিদা আক্তার, নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক সৌভিক রেজা, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, আ-আল মামুন, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ড. সামিনা লুৎফা, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মাইদুল ইসলাম, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, তানভীর মুরাদ, শিক্ষক, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট, ড. সিউতি সবুর, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর