মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

জ্বর সর্দি কাশি নিয়ে আরও ৩ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও তিনজন মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা পটুয়াখালী, ঢাকার ধামরাই ও নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। তাদের মৃত্যুতে এলাকাগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। লকডাউন করা হয়েছে বাড়িঘর। পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সবার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

পটুয়াখালীর গলাচিপায় মো. মোসলেম গাজী (৬৫) নামের এক ইউপি সদস্য জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে মারা গেছেন। গতকাল ভোররাতে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চর আগস্তী গ্রামের ওই ইউপি সদস্য কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ভোররাতে তিনি নিজ বাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় মারা গেছেন। নিয়মকানুন মেনে মেনে দুপুরে তাকে দাফন করা হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দিতে আসা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপসহকারী মো. শাহিন মিয়াসহ মৃতের পরিবারের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ জাহাঙ্গির আলম বলেন, মৃতের পরিবার ও তার সংস্পর্শে আসা আশপাশের সবার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হবে। নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা এলাকায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন খোকন সাহা নামে এক ব্যবসায়ী। মৃত খোকন সাহা কালীরবাজারে জেবিএল কনফেকশনারির মালিক। গলাচিপা চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় তিনিসহ সাত বন্ধু মিলে সাততলা ভবন নির্মাণ করে ওই ভবনের চার তলাতে স্ত্রী ও ছোট দুই মেয়ে নিয়ে থাকতেন। জানা গেছে, খোকনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আশপাশের ফ্ল্যাটে থাকা তার বন্ধুদের এবং আত্মীয়দের ডেকেছিলেন হাসপাতালে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করতে। কিন্তু কেউ আসেননি। পরে স্ত্রী ও ছোট দুই মেয়েই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে সিঁড়ি দিয়ে নামানোর সময়ই তিনি মারা যান।

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-২-এর নিরাপত্তা প্রহরী মো. মুরাদ হোসেন মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। রবিবার সকালে ৬টার দিকে মারা গেছেন বলে তাঁর বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম জানান। মুরাদ হোসেনের গ্রামের বাড়ি ঢাকার ধামরাই উপজেলায়। সেখানে মুরাদ হোসেনের স্ত্রী, বড় ছেলে ও দুই মেয়ে আছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএনসিসির অঞ্চল-৪ এর এক কর্মকর্তা বলেন, মুরাদ হোসেন ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এ কাজ করতেন।

 তবে রাতে আরও কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে অঞ্চল-৪ এ থাকতেন। এই কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবারও তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর শুক্রবার জ্বর ও শ্বাসকষ্টের কথা জানা যায়। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মুরাদ হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, তার বাবার আগে থেকেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। হঠাৎ করে তা বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। রবিবার সকালে তিনি মারা যান। রফিকুল ইসলাম বলেন, রবিবার সকালে বাবার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আমাকে ফোন করে ইনহেলার নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন, কিন্তু আমি যাওয়ার আগেই তিনি মারা গেছেন।

সর্বশেষ খবর