শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

রূপরেখা আপৎকালীন বাজেটের

কোরআনের উদ্ধৃতিতে বক্তৃতা শেষ করবেন অর্থমন্ত্রী

মানিক মুনতাসির

রূপরেখা আপৎকালীন বাজেটের

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মনে করেন করোনা ভাইরাস মহামারী একটি আল্লাহর পরীক্ষা। তাই এই মহামারী কাটিয়ে ওঠার জন্য কোরআনের দ্বিতীয় এবং দীর্ঘতম সূরা আল বাকারার-১৫৫ নম্বর উদ্ধৃতি দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের স্মার্ট বাজেটের বক্তব্য শেষ করবেন বলে জানা গেছে। বাজেট বক্তৃতায় তিনি সূরা বাকারার ১৫৫ নম্বর আয়াত থেকে উদ্ধৃত করবেন যেখানে আছে, ‘আমি অবশ্যই আপনাকে কিছু ভয় এবং ক্ষুধা, জীবন, সম্পত্তি ও ফসলের ক্ষতি নিয়ে পরীক্ষা করব (পরীক্ষা) করব। এবং রোগীকে সুসংবাদ দাও’।

বাজেট বক্তৃতার শেষাংশে তিনি বলবেন, সর্বশক্তিমান স্রষ্টা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি তাঁর সৃষ্টিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য কিছুই করবেন না, যা তিনি মঙ্গলজনকভাবে করেন। তাই শিগগিরই তিনি আমাদের সবাইকে তাঁর কল্যাণের শীতল ছায়ায় আশ্রয় দিয়ে এই মহামারী ভাইরাস থেকে রক্ষা করবেন এবং আমরা আমাদের সাধারণ জীবনে ফিরে যাব, একটি উজ্জ্বল ভোরের সংস্পর্শে আসব। বাজেট বক্তৃতায় তিনি আরও বলবেন, কোরোনাভাইরাসের এই মহামারীতে এবারের সময়টা একেবারেই ভিন্ন। এটা গতানুগতিক বাজেট নয়। এটা একটা আপৎকালীন বাজেট। বাজেট বর্তমান পরিস্থিতিতে আয় বা ব্যয়ের পরিকল্পনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এটা একটা আপৎকালীন বাজেট। তার বাজেট বক্তৃতায় থাকবে এই সংকটময় অবস্থা উত্তরণে সহায়তা পদক্ষেপ হিসেবে এই প্রণোদনা প্যাকেজের মাধামে তাৎক্ষণিক করণীয়, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের মাধামে দেশের অর্থনীতি ফরোনার নেতিবাচক প্রভাব থেকে বেরিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। তাই এই সংকটময় সময়ে আমাদের ধৈর্য এবং সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। ইতিহাস সাক্ষী, বাঙালী জাতি বীরের জাতি। যুগে মুগে জাতীয় জীবনে নানা দুর্যোগ ও সংকটময় মুহূর্ত এসেছে। বাঙালি জাতি সম্মিলিত শক্তির ফলেই সেসব দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে। জাতীয় বাজেট একটি দেশের জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ, যেটি প্রস্তুত করতে অবশ্যই অপরিহার্য কিছু সুনির্দিষ্ট ভিত্তি অনুসরণ করতে হয় কিন্তু এখন সেগুলো পরিপূর্ণভাবে আমাদের সামনে নেই। বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এটি হয়ে পড়েছে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। আয় বা ব্যয়ের খাত নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনাও কারা সম্ভব হচ্ছে না। আয়ের খাত তো অবশ্যই এখন অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এবং ব্যয়ের খাতগুলো নিয়েও অনুমানভিত্তিক পরিকল্পনা নেওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া অনুমাননির্ভর কিছু উপস্থাপন করতেও একটি ভিত্তির প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সেটিও সম্ভব নয়। তাই আমাদের এবারের বাজেটটি গতানুগতিক ধারার কোনো বাজেট নয় অর্থাৎ প্রতি বছর যে নিয়মিত বাজেট পেশ করা হয়, এটি সম্পূর্ণরূপে সেটি হতে ভিন্ন অবয়বের বাজেট। এটি একটি আপৎকালীন বাজেট। যেটি আমরা এখনকার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে পেশ করছি। এই বাজেটটিকে আমরা পেশ করছি সম্পূর্ণ আমাদের অতীতের অর্জন আর বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতির সমন্বয়ের ভিত্তিতে। আমাদের এবারের বাজেট কোনো আবেগ বা উচ্চাভিলাষ নয় বরং বিদ্যমান বাস্তবতা, সময়ের দাবি ও নির্মোহ অর্থনৈতিক সূত্র অনুসরণের চেষ্টার ফসল।

সর্বশেষ খবর