শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ

অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বিনিয়োগের আকর্ষণীয় ও অনুকূল পরিবেশ উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড এ কে আবদুল মোমেন।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর মারিসে আন পেইনির সঙ্গে ফোনে আলাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অস্ট্রেলিয়ার সহায়তাও কামনা করেন। গতকাল ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. মোমেন বলেন, এ অঞ্চলের যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগ লাভজনক। বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান। অন্য দেশ থেকে কোনো কোম্পানি এদেশে বিনিয়োগ স্থানান্তর করতে চাইলেও বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক সমস্যা করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে চায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১০০টি অথনৈতিক অঞ্চল সৃষ্টি করছে যেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করলে তারা যেমন লাভবান হবেন, বাংলাদেশিদেরও কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে ২৮টি হাইটেক পার্ক এবং  বিপুলসংখ্যক তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনগোষ্ঠী রয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অস্ট্রেলিয়ার সহায়তা কামনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গারা নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফিরে গেলেই কেবল তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হতে পারে। অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে বাংলাদেশ সাময়িকভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে রোহিঙ্গারা গভীর সমুদ্রে আশ্রয় নিলেও কোনো দেশ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে না। অন্যান্য দেশেরও উচিত তাদের দায়িত্ব নেওয়া। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী  উল্লেখ করেন, মানবিক কারণে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে রাখা হয়েছে। সাইক্লোন আম্ফানে সারা দেশে ব্যাপক ক্ষতি হলেও ভাসানচরে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। তিনি বলেন, সেখানকার রোহিঙ্গারা কিছু অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবে। ৪৮টি দেশের সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা যাতে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি বৃদ্ধি না পায় সে বিষয়ে এ ফোরামের উদ্যোগের বিষয়ে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সহায়তা কামনা করেন। ড. মোমেন উল্লেখ করেন, জাতিসংঘে কমনওয়েলথের কোনো অফিস বা প্রতিনিধি না থাকায় জাতিসংঘের আলোচনায় এ সংস্থা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। জাতিসংঘের আলোচনায় প্রতিনিধিত্ব থাকলে সংস্থা হিসেবে কমনওয়েলথের সক্ষমতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে। এ সময় ড. মোমেন করোনা মহামারী অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নরত ছাত্রসহ সেদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সহযোগিতার জন্য অস্ট্রেলিয়ার সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

সর্বশেষ খবর