শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অপ্রতুলতা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বাজেটে বরাদ্দের টাকা খরচ করতে না পারা এবং প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অপ্রতুলতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গতকাল জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জি এম কাদের বলেন, কভিড-১৯ মোকাবিলায় (বাজেটে) সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা যদি না থাকে, নির্দেশনাহীন অর্থবরাদ্দ কতটা কার্যকর হবে তা সন্দেহের অবকাশ আছে। তিনি  দেশের হাসপাতালগুলোতে বিরাজমান চিকিৎসা সংকট, হাসপাতাল পরিচালনায় অব্যবস্থাপনা ও ক্রয় খাতে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে এসব নিরসনে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান। বিরোধী দলের উপনেতা বলেন, বর্তমানে কভিড-১৯ এর কারণে সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি সবার উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশের যে কোনো মানুষকে এখন জিজ্ঞাসা করলে তারা এককথায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি সম্পূরক বাজেটে তাদের কোনো সংশোধনী বাজেট নেই। তাদের সম্পূরক বাজেট দাবি করতে হয়নি। বাস্তবতা হলো তাদের বাজেট বরাদ্দের চেয়ে খরচ হয়েছে কম। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা খরচ করতে পেরেছে ২৩ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। জি এম কদের আরও বলেন, বাজেটে বরাদ্দ হ্রাস করাকে মিতব্যয়িতা বলার চেষ্টা হলেও প্রয়োজনীয় খরচ না করা হলে তা নেতিবাচক। আর এটা হয় সক্ষমতার অভাবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। কর্তব্য পালনে আন্তরিকতার অভাব, দুর্নীতি ও দলাদলিতে ব্যস্ত থাকার কারণে এটা হয়। আর খরচ কম হচ্ছে মানে দুর্নীতির মাধ্যমে অপচয় হচ্ছে না সেটা নয়। খরচ যেটা হচ্ছে তার মধ্যেও অপচয়ের খবর আমরা শুনতে পাই। তিনি বলেন, আসন্ন অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ অপ্রতুল। মানুষ স্বাভাবিকভাবে ধারণা করেছিল এবার স্বাস্থ্য খাতে বিরাট বাজেট দেওয়া হবে। কিন্তু দেখা গেল সেখানে বরাদ্দ হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার কোটি টাকার মতো বেশি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এটা বুঝি যারা বাজেট প্রণয়ন করেছেন, তারা দেখেছেন, যারা খরচ করতে পারে না তাহলে তাদের বাজেট বাড়িয়ে লাভ কী হবে? আমার মনে হয় অর্থমন্ত্রীও এটা মনে করছেন। জি এম কাদের দেশের হাসপাতালগুলোর চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে নিজের নির্বাচনী এলাকার লালমনিরহাটের হাসপাতালের চিত্র তুলে ধরে বলেন, সেখানে হাসপাতালে ৩৯টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ১১ জন কর্মরত, ৫৪ জন কর্মচারীর মধ্যে কর্মরত ৩৭ জন। এখানে প্রয়োজনীয় ২২ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মধ্যে চারটি পদ আছে। ১০০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০-এ উন্নীত করা হয়েছে। লোকবল বাড়ানো হয়নি। হাসপাতালে ২২ জন ওয়ার্ডবয় ও সমান সংখ্যক আয়ার দরকার হলেও কোনো পদ নেই। নিরাপত্তাপ্রহরীর পদ নেই। হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সময় মন্ত্রণালয়কে এটা জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি। এর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সরবরাহকৃত এক্স-রে মেশিনসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি কিছুদিনের মধ্যেই অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতর ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধু চিঠি চালাচালি হয়। কিন্তু কোনো কাজ হয় না।

সর্বশেষ খবর