শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

মানুষ না বাঁচলে বাজেট কার জন্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানুষ না বাঁচলে বাজেট কার জন্য

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘এবার মানুষকে প্রাধিকার দিয়েছি। এটা অর্থনীতির বাজেট নয়। একদিকে অর্থনীতির বাজেট, পাশাপাশি এটা মানবিক বাজেট। আমরা এ বাজেট একটা এক্সপেন্ডিচারের পার্সপেকটিভ (ব্যয়ের দৃষ্টিকোণ) থেকে দিয়েছি। যদি বাজেট তৈরি না করি, তাহলে অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তোলার কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা বাজেট তৈরি করেছি  দেশের মানুষকে সামনে রেখে। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। তাদের এ করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার চেষ্টা থাকবে। মানুষ না বাঁচলে বাজেট কার জন্য। অন্যবার রেভিনিউ (রাজস্ব) অর্জন করি এবং রেভিনিউ খরচ করি। আমি এবার রাজস্ব খরচ করব, তারপর রাজস্ব অর্জন করব। পে অ্যাজ ইউ আর্ন।’ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের তৃতীয় দিন গতকাল ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির এমপি হারুন সাহেব সম্পূরক বাজেট নিয়ে কিছু বলেননি। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন বাজেট আগে ব্যয় করা নিয়ে। আমরা এবারের বাজেট একটা এক্সপেন্ডিচারের পার্সপেকটিভ (ব্যয়ের দৃষ্টিকোণ) থেকে দিয়েছি। এখন যদি খরচ না করি, মানুষ বাঁচবে কেমন করে? আর মানুষকে যদি বাঁচাতে না পারি, দেশ কার জন্য? দেশের বাজেট কার জন্য?’ এ সময় তিনি সব বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেন, ‘এবারের বাজেট সবার বাজেট। সাধারণত আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাজেট করে থাকি। তাই বাজেটে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভিন্ন উপাদান প্রাধিকার পায়। এবার আমরা সেটা করিনি। এবার মানুষকে প্রাধিকার দিয়েছি। এটা অর্থনীতির বাজেট নয়। একদিকে অর্থনীতির বাজেট, পাশাপাশি এটা মানবিক বাজেট।’

তিনি বলেন, ‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ বাজেটটি ঘোষণা করেছি, সুতরাং এ বিবেচনাটি মাথায় রেখে, আসুন, সবাই একমত হই। দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হলে সবাইকে লাগবে। সবাইকে নিয়েই এ কাজটি করতে হবে।’ আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের গ্রামে যেতে বলেছেন। গ্রামের মানুষকে, গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। যারা গ্রামের পান দোকানদার, মুদি দোকানদার, তাদের সবাইকে রক্ষা করতে হবে। তাদের দায়িত্ব নিয়েই এ বাজেট করেছি।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ৬ লাখ ৭০ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা থেকে নিট বরাদ্দ ৫ লাখ ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনা দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যসেবা খাত, চিকিৎসা বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে অতিরিক্ত ৩ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রতি বাজেটেই সরকারের উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলোসহ সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রাক্কলন করা হয়। পরে বাজেট বাস্তবায়ন পর্যায়ে বিভিন্ন যৌক্তিক কারণে বাজেটে কিছুটা সংশোধন ও সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়। এ বছরের প্রেক্ষাপটটা আমাদের সবার জানা। বৈশ্বিক মহামারী কভিড-১৯ এর অর্থনীতির অভিঘাত বিবেচনায় আমরা সমগ্র বাজেটে রাজস্ব আয়-ব্যয় এবং ঘাটতির কিছুটা সমন্বয় করেছি। জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় আমরা ৮ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ২ শতাশং পুনর্নির্ধারণ করেছি। তাও যদি আমরা অর্জন করতে পারি, তা হবে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ। যে কারণে সমন্বয়ের ফলে প্রাক্কলিত জিডিপি ২৮ লাখ ৮৬ হাজার ৮৭২ কোটি টাকার পরিবর্তে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা নির্ধারিত হয়েছে।’

 

সর্বশেষ খবর