করোনা প্রকোপের সময় উপনির্বাচন দিয়ে জনগণকে মৃত্যু ও সংক্রমণের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন করোনাকালে উপনির্বাচন না করে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপিম কোর্টের কাছে নির্দেশনা চাইতে পারত। এটাই একমাত্র পথ ছিল।
করোনা প্রকোপে দুই উপনির্বাচন অনুষ্ঠান, জনগনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ১৪ জুলাই বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণের আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, করোনাকালে ভোট করে নির্বাচন কমিশন জনগণের সংক্রমিত হওয়ার এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই সময়ে উপনির্বাচন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কেননা এর মাধ্যমে জনগণের সম্মতির শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। এই নির্বাচন বিশ্লেষক বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন যখন সংবিধানের কথা বলে তখন সেটা মনে হয় ‘ভূতের মুখে রাম নাম’। এই নির্বাচন কমিশন পদে পদে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। তাদের বড় সংবিধান লঙ্ঘল হচ্ছে- তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে না। তারা সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার কথা। কিন্তু তারা আমাদের নির্বাচনের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। সুজন সম্পাদক বলেন, নির্বাচন মানে কী? নির্বাচন হলো জনগণের সম্মতি অর্জন করা। জনগণ যাকে ভোট দিয়ে সম্মতি দেবে, তিনি জনপ্রতিনিধি হবেন। কিন্তু বর্তমানের যে ভোটারবিহীন নির্বাচন হচ্ছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। গণতন্ত্রের জন্য কোনোভাবেই শুভকর নয়। করোনাকালে সংবিধানের নামে নির্বাচন কমিশন যেটা (ভোট) করার চেষ্টা করছে এটা অনাকাক্সিক্ষত, অনভিপ্রেত এবং অযৌক্তিক। তিনি বলেন, এ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমত মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে কোনোভাবেই আমরা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পারব না। ওটা হবে শেয়ালের কাছে মুরগি পাহারা দেওয়ার মতো। ইসি যেটা করতে পারত রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপিম কোর্টের কাছে নির্দেশনা চাইতে পারত। গত ১৮ জানুয়ারি আবদুল মান্নানের মৃত্যুতে বগুড়া-১ আসনটি শূন্য হয়। সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেকের মৃত্যুতে যশোর-৬ আসনটি ২১ জানুয়ারি শূন্য হয়। এরপর ২৯ জানুয়ারি ভোটের তারিখ দিয়ে এই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে শেষ মুহূর্তে ভোট স্থগিত করা হয়। পরে গত ৪ জুলাই আবারও ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।