এবার লাজ ফার্মায় পাওয়া গেল আমদানি নিষিদ্ধ ও অনুমোদনহীন ওষুধ। দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর মানুষ ওষুধের জন্য এই লাজ ফার্মায় আস্থা রাখলেও এবার সে আস্থায়ও গুড়েবালি। র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসুর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল অভিযান চালিয়ে লাজ ফার্মার কাকরাইল শাখা থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনহীন কমপক্ষে ৫০ প্রকারের ওষুধ জব্দ করেছে। সাতজনকে আসামি করে ২৯ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই মানুষের বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল লাজ ফার্মা। সব ধরনের ওষুধ পাওয়া যায় কাস্টমারদের এই বিশ্বাস সৃষ্টির পেছনে তারা মজুদ করেছিল অনুমোদনহীন মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। ওই শাখার কর্মচারীরা বলেছেন, লাজ ফার্মার রেপুটেশন বাড়াতেই সবকিছু করা হতো। এসব বক্তব্যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ফার্মেসিটির ম্যানেজার রতন সরকার। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে লাজ ফার্মার কাকরাইল শাখায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, দুজন ভিকটিমের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ৩০ লাখ টাকার কমপক্ষে ৫০ প্রকারের ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে বেশকিছু ওষুধ আমদানি নিষিদ্ধ এবং অনুমোদনহীন। বেশ কয়েক প্রকার ক্ষতিকর ইনজেকশনও পাওয়া গেছে। মোটা অঙ্কের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বেআইনিভাবে এগুলো বিক্রি করা হতো। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে রতন সরকার, সহকারী ম্যানেজার মো. আমিরুল ইসলাম, সিনিয়র সেলসম্যান মো. আল মামুন, সুপারভাইজার মো. মামুনুর রশিদ, জুনিয়র সুপারভাইজার হৃদয় সরকারকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং জুনিয়র সেলসম্যান মো. রুবেল হোসেন ও মোস্তাকিন নাজিমকে ২ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যে নকল সিল : দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যে নকল সিল মেরে বিক্রি করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। অভিযানের সময় উপস্থিত স্কাটন রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী হুমায়ুন আহমেদ জানান, গতকাল দুপুরে তিনি ¯œ্যাক ব্র্যান্ডের একটি পাউডার কিনে বাসায় গিয়ে দেখতে পান আসল মেয়াদের ওপর নকল সিল লাগানো। পরে হাত দিয়ে ঘষা দিতেই নকল সিল উঠে মেয়াদোত্তীর্ণ সিল বেরিয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন, মানুষ ভরসার জায়গা থেকে এ ধরনের বড় ফার্মা থেকে ওষুধ কিনতে আসেন। কিন্তু ওষুধের মতো সেনসিটিভ জিনিস নিয়ে এ ধরনের প্রতারণা কখনই মানা যায় না।