মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে প্রশ্নপত্র জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। এর সঙ্গে ওই চক্রের ২০০ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ ইতিমধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে এসেছে। জালিয়াত চক্রের হোতা জসিম, পারভেজ ও জাকিরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তারা মুখ খুলতে শুরু করে। গতকাল ওই তিনজনের সাত দিনের রিমান্ডের তৃতীয় দিন ছিল।
এই চক্রের তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়া গেছে যে, জড়িত ওই ২০০ জনের মধ্যে জালিয়াতি করে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশকিছু শিক্ষার্থীর নামও জানা গেছে। গতকাল সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। সিআইডি জানায়, প্রেসের মেশিনম্যান সালাম এবং তার খালাতো ভাই জসিম মিলে গড়ে তুলেছিলেন এ চক্র। দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে পুরো চক্রটিকে চিহ্নিত করেছে সিআইডি। প্রশ্নপত্র ফাঁস করা চক্রের সদস্যদের অবৈধ সম্পদেরও খোঁজ পেয়েছে সিআইডি। চক্রের হোতা জসিমের ঢাকায় দুটি বাড়ি ও একটি গাড়ি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ২০ জুলাই গ্রেফতারের পর সিআইডি জানিয়েছিল, জসিমের কাছে ২ কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক পাওয়া গেছে। এছাড়া পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক পাওয়া গেছে। দেশব্যাপী চক্রটির প্রায় অর্ধশত সহযোগীর খোঁজ পাওয়া গেছে। আসামিরা সংঘবদ্ধ চক্র হিসেবে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছাপাখানা থেকে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করেছে। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের কাছে সেই প্রশ্ন পৌঁছে দিতেন তারা। সিআইডির এসপি এস এম আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, তিন আসামি জিজ্ঞাসাবাদে তাদের আশ্রয়-প্রশয়দাতা, সহযোগিতাকারী এবং জালিয়াতি করে যারা মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন তাদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ভর্তি হওয়া কিছু শিক্ষার্থীর নামও বলেছেন তারা। এসব তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে।