করোনাভাইরাসের নতুন কোনো ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে তা বিশ্বব্যাপী দ্রুত ও সমভাবে বিতরণ করতে একটি উল্লেখযোগ্য চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বিশ্বের ১৫৬টি দেশ। চুক্তিতে সম্মত দেশগুলোর ৩ শতাংশ জনসংখ্যাকে এ টিকা দেওয়া হবে। এর আওতায় স্বাস্থ্য খাত, সম্মুখ সারিতে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মী ও সমাজকর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি (কোভ্যাক্স) প্রকল্পের মাধ্যমে টিকা বরাদ্দের পরিকল্পনা করেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
খবরে বলা হয়, উচ্চ আয়ের ৬৪টি দেশ ইতিমধ্যে কোভ্যাক্সে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি দেশ ও ইউরোপিয়ান কমিশনের পক্ষ থেকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। সামনে আরও ৩৮টি দেশ এই দলে যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ২০০ কোটি ডোজ নিরাপদ, কার্যকর টিকা সরবরাহ করার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার, টিকা নির্মাতারা, সংস্থা এবং ব্যক্তি পর্যায়ে এখন পর্যন্ত টিকা গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। চুক্তিবদ্ধ দেশগুলোতে প্রথমে ৩ শতাংশ টিকা বরাদ্দ করা হলেও পরে প্রতিটি দেশের দুর্বল জনসংখ্যার কথা চিন্তা করে তা ২০ শতাংশে উন্নীত করা হবে। সোমবার জেনেভাতে এক সংবাদ সম্মেলনে চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ করে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইসিস বলেছেন, কোভ্যাক্স বিশ্বের বৃহত্তম এবং কভিড টিকার সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ পোর্টফোলিওর প্রতিনিধিত্ব করছে। এর আওতায় সবচেয়ে বেশি যারা ঝুঁকিতে আছে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই প্রকল্পটি সব দেশের কিছু মানুষের জন্য, কিন্তু কিছু দেশের সব লোকের জন্য টিকা নিশ্চিত করবে না। জিএভিআইর প্রধান নির্বাহী সেথ বার্কলে বলেন, ‘প্রতিটি মহাদেশের দেশগুলো একত্রে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। এতে শুধু নিজস্ব জনগণের জন্য টিকা নয়, বরং সবখানে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে টিকা দেওয়ার বিষয়টিতে সাহায্য করা যাবে। কোভ্যাক্স সুবিধার জন্য যে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, তাতে নিরাপদ ও কার্যকর টিকা পাওয়া গেলে করোনা মহামারী শেষ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ সিপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. রিচার্ড হ্যাচেট বলেছেন, এই মহামারী মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে জনস্বাস্থ্যের ইতিহাসের এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত রেখেছে। তিনি আরও বলেন, দেশগুলো এভাবে একত্রিত হয়ে এই মহামারী শেষ করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এখন সবাইকে টিকা তৈরির ব্যাপারে একত্রিত থাকতে হবে যাতে ২০২১ সালের মধ্যে ২০০ কোটি টিকার ডোজ পাওয়া যায়।