মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সু চি-শ্রিংলা বৈঠকে দ্রুত রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়ার অনুরোধ

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে রাখাইন প্রদেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দুই দিন ধরে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নাভারনে। বৈঠক শেষে সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। পররাষ্ট্রসচিব ও সেনাপ্রধান মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে ৪-৫ অক্টোবর এই বৈঠক করেন। মিয়ানমারে আগামী নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন। সরকারি সূত্রমতে, তার আগেই রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য শ্রিংলা অনুরোধ করেছেন।

রাখাইন প্রদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহুমুখী পরিবহন যোগাযোগ প্রকল্প রয়েছে, যা কালাদান প্রকল্প রূপে পরিচিত। ভারতের উত্তর-পূর্বের প্রদেশের সঙ্গে রাখাইন প্রদেশের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড পর্যন্ত বাণিজ্য সড়ক খোলার পরিকল্পনা। সরকারি সূত্র জানায়, প্রয়োজনে এই প্রকল্পে পরে বাংলাদেশও যোগ দিতে পারে। তারাও দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করার সুযোগ পাবে। আগামী বছরের গোড়ায় সিত্তে বন্দর চালু হবে। আলোচনায় তিন দেশের মধ্যে মোটরযান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষর চূড়ান্ত করা নিয়ে আলোচনা হয়। স্টেট কাউন্সিলর সু চি ছাড়াও তারা দেখা করেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সিনিয়র জেনারেল কমান্ডার ইন চিফ মিং আং হালাং-এর সঙ্গে। কথা বলেন সেনাবাহিনীর উপপ্রধানের সঙ্গেও। মিয়ানমারের সরকারি নীতিনির্ধারণে সেনাবাহিনীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনায় রাখাইন প্রদেশের উন্নয়নে তৃতীয় পর্যায় বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই উন্নয়ন প্রকল্পে বাস্তু তো আছেই, বিদ্যালয়ও গড়ে তোলা হয়েছে যাতে রাখাইন প্রদেশে উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে ওঠে। সম্প্রতি মিয়ানমারে জাতীয় সর্বসম্মতি তৈরির জন্য যে শান্তি বৈঠক হয়, ভারত তার প্রতি সমর্থন জানায়। দশটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি বৈঠক হয়। ভারতের সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ে বৈঠকে সীমান্ত নিরাপত্তা বজায় রাখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমার সরকার সম্প্রতি ভারতীয় ২২ জঙ্গিকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানান। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা কভিড মোকাবিলার জন্য কাউন্সিলর সু চির হাতে ৩ হাজার রেমডেসিভির ক্যাপসুল তুলে দেন। এ ছাড়া প্রতিশ্রুতি দেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে মিয়ানমারকে ভারত অগ্রাধিকার দেবে।

প্রদেশে সীমান্ত হাটে যাওয়ার সেতু তৈরির জন্য ভারত ২০ লাখ ডলার অনুদান ঘোষণা করে। মিয়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যের জন্য উচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুৎ গ্রিড নির্মাণ হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর