আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদন্ড করায় এই অপরাধ কমে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, বিশ্বে মৃত্যুদন্ডের ব্যাপারে অনেক বিতর্ক আছে। তারপরও বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এই সাজা বাড়ানো উচিত বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুদন্ডের ব্যাপারে সংশোধনী আনা হয়েছে। গতকাল দুপুরে গুলশানে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, সাজা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি পুরাতন ধর্ষণ মামলাগুলো আগে এবং নতুন মামলাগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপিদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে, যাতে তারা ধর্ষণ মামলাগুলো শেষ করার ব্যাপারে ইমিডিয়েট পদক্ষেপ নেন। তিনি আরও বলেন, আগে সাক্ষীদের আদালতে আসার ব্যাপারে কিছু সমস্যা ছিল। এখন সরকার ডিজিটাইজেশনের সাহায্যে সাক্ষীদেরকে মোবাইলের মাধ্যমে মেসেজ দেওয়ার একটি পদ্ধতি অবলম্বন করছে। এসব নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে ধর্ষণ মামলাসহ অন্যান্য মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির পথ তৈরি হবে। সাক্ষী সুরক্ষা আইন নিয়েও সরকার কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অবশ্যই রক্ষা করা হবে। প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করা হবে, তিনি যেন একটি প্রাকটিস ডাইরেকশন দেন যাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলো দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারকরা যথাযথ পদক্ষেপ নেন।আইনমন্ত্রী জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান ছিল। মস্ত্রিসভার বৈঠকে এ ধারায় সংশোধনীর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ড। ধারা ৯(১) এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় ৯(৪) ধারাতেও সংশোধন আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে হাই কোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ধারা সংশোধন করে সাধারণ জখমের জন্য আপসের বিধান রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। সে অনুযায়ী ১১(গ) ধারা সংশোধন করে আপসের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের শিশু আইনের একটি সংশোধনী আনা হয়েছে। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপরি উল্লিখিত সংশোধনীগুলো ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সংসদ অধিবেশন চলমান না থাকায় এটা অধ্যাদেশ আকারে জারি করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং আগামীকাল (মঙ্গলবার) রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে এটাকে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।