কালক্ষেপণ না করে যুক্তরাষ্ট্রের কলঙ্ক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা উচিত- এমন দাবি উঠেছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার ও ইউএস সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, ক্যাপিটল হিলে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। আর ওই হামলার নির্দেশদাতা ট্রাম্পের মতো একজন জঘন্য মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, এটি ভাবতেও ঘৃণা লাগে। এমন সন্ত্রাসীকে সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী বিচারে সোপর্দ করা হলেই গণতান্ত্রিক বিশ্ব এবং আমেরিকার শান্তি ও উন্নয়নপ্রত্যাশীরা স্বস্তি পাবেন।
‘চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না এমন কলঙ্কিত অধ্যায়ের সংযোজন ঘটিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। এক মুহূর্তের জন্যও তাকে সেখানে অবস্থানের সুযোগ দেওয়া সমীচীন হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন আমেরিকা-বাংলাদেশ অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি এম সালাম।ফোবানার চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ট্রাম্পের আচরণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের স্বরূপ। ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে তার নির্দেশে সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের গায়ে কালিমা লিপ্ত হলো। এহেন জঘন্য অপকর্মে, সন্ত্রাসে লিপ্ত হওয়ার দায়ে ট্রাম্পকে অবিলম্বে ইমপিচ করা হবে বলে আশা করছি।’ মূলধারার নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদল বলেন, ‘সারা বিশ্বে আমরা গণতন্ত্রের আর মানবাধিকারের সবক দিয়ে আসছি। অথচ সেই দেশের প্রেসিডেন্টের যে আচরণ বিশ্ববাসী অবলোকন করলেন, তাতে বিস্মিত হইনি। কারণ তার গত চার বছরের আচরণেরই এটি নগ্ন প্রকাশ। এমন কলঙ্কিত অধ্যায়ের জন্য ট্রাম্পকে চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদান করতে হবে।’
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য খোরশেদ খন্দকার বলেন, ‘ট্রাম্পকে অবিলম্বে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে কংগ্রেসের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে উঠেছে। সভ্যতার শীর্ষে অবস্থানকারী হিসেবে দাবিদার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এমন সন্ত্রাসী চার বছর অধিষ্ঠিত ছিল তা ভাবতেও অবাক লাগে।’ নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সেক্রেটারি আবদুল কাদের মিয়া বলেন, ‘লজ্জাবোধ করছি এ দেশের নাগরিক হিসেবে। এ লজ্জার অবসানে চাই অবিলম্বে হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পের বিদায়।’ সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ বলেন, ট্রাম্পের আচরণে গোটা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র আজ প্রশ্নবিদ্ধ। এহেন অপকর্মের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।
বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির চেয়ারম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আলিম খান আকাশ বলেন, ‘সভ্যতার স্বার্থে, গণতন্ত্রের ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখার অভিপ্রায়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে জরুরিভাবে। এ জন্য কংগ্রেসের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
লস অ্যাঞ্জেলেস কমিউনিটির লিডার মমিনুল হক বাচ্চু বলেন, ‘লজ্জাবোধ করছি গণতন্ত্রের গায়ে ট্রাম্পের কালিমা লেপনের ঘটনায়। এ জন্য ট্রাম্পের বিচার দাবি করছি।’
বাই-ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট আতিকুর রহমান ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, ‘ট্রাম্প নামক মানুষটি যুক্তরাষ্ট্রের কলঙ্ক। কলঙ্কিত অধ্যায় থেকে আমেরিকার মুক্তির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেবে মার্কিন কংগ্রেস, এ আশা করছি।’
রিপাবলিকান পার্টির সংগঠক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা গিয়াস আহমেদ বলেন, ট্রাম্পের নাম উচ্চারণ করতেও লজ্জাবোধ করছি। এমন একজন সন্ত্রাসী কীভাবে হোয়াইট হাউসে বসে আছেন, সেটি ভাবতেও অবাক লাগে। আশা করছি কংগ্রেস ট্রাম্পকে সমুচিত শাস্তি প্রদানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
বিএনপি নেতা এম এ বাতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ইতিহাসে কালিমা লেপনকারী ট্রাম্পকে অপসারণই যথেষ্ট নয়, সমুচিত শাস্তি চাই।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, টেক্সাস, মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, নিউজার্সি সর্বত্র প্রবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ আর আতঙ্ক বিরাজ করছে। একদিকে করোনার ভয়াবহ থাবার বিস্তার, অন্যদিকে ট্রাম্পের নেতৃত্বে সন্ত্রাস জনগণকে সন্ত্রস্ত করে তুলেছে। সবাই নিজ নিজ এলাকার কংগ্রেসম্যান আর সিনেটর সমীপে আবেদন জানিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব ট্রাম্পকে অপসারণের জন্য।