শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

২৮ জানুয়ারির মধ্যেই এইচএসসির ফল প্রকাশ

আইনের সংশোধন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই’ ফল প্রকাশ করতে আইন সংশোধনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন হয়। জাতীয় সংসদে এ আইন পাস করেই আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে বৈঠকে যুক্ত হন। বৈঠকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর আইন, ২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেওয়ানি মামলা বিচারের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের বিচারকদের আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার বাড়িয়ে ‘দ্য সিভিল কোর্টস (সংশোধন) অ্যাক্ট, ২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬১ (সংশোধন)’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০১৮’ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইনে আছে, পরীক্ষা নিয়ে রেজাল্ট দিতে হবে। যেহেতু এবার পরীক্ষা নেওয়া যায়নি, তাই ৭-১০ দিনের মধ্যে রেজাল্ট দিতে অধ্যাদেশ জারির প্রস্তাব করেছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। কিন্তু মন্ত্রিসভায় আলোচনার পর দেখা গেল, আর মাত্র সাত দিন পর সংসদ বসবে। তাই মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে, এটা অর্ডিন্যান্স করার দরকার নেই। এটা ভেটিং সাপেক্ষে সরাসরি অনুমোদন দেওয়া হলো। (সংসদ অধিবেশনের) প্রথম দিনই এটা উত্থাপন করে ২-৩ দিনের মধ্যে আইন করে যাতে ২৫, ২৬ বা ম্যাক্সিমাম ২৮ জানুয়ারির মধ্যে রেজাল্ট দিয়ে দেওয়া যায়, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মন্ত্রিসভা পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে নতুন একটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। অন্যান্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলেই নতুন এই আইন করা হচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবারও মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। তিনি জানান, বর্তমানে মোট ১৫৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে ৪৬টি সরকারি এবং ১০৭টি বেসরকারি। আর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাতটি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গতকালের বৈঠকে ‘কাস্টমস আইন ২০২১’ এর খসড়ায় নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর আগে ‘কাস্টমস আইন ২০২০’ নামে একটি খসড়া জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কিছু পর্যবেক্ষণ দিলে বিষয়টি ফেরত আসায় সংশোধন করে নতুন করে উত্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, এখানে কাস্টমস মূল্য, এসএসবেল ভ্যালু এবং ইলেকট্রনিক ডেটা, মুদ্রা ও দলিলপত্রের কথা সংযোজন করা হয়েছে, যা আগের আইনে ছিল না। এ ছাড়া মন্ত্রিসভা ১৫টি নতুন মিড ওয়াটার ট্রলার বৃদ্ধির অনুমোদন বাতিল করেছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই মন্ত্রিসভা বঙ্গোপসাগরে একান্ত অর্থনৈতিক এলাকায় ট্রলারের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে মন্ত্রিসভার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সেটি বাতিল করেছে সরকার।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দেওয়ানি মামলা বিচারের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের বিচারকদের আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার বাড়াতে ‘দ্য সিভিল কোর্টস (সংশোধন) অ্যাক্ট ২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে সিভিল কোর্টগুলোর বিচারিক এখতিয়ার বাড়ানো হচ্ছে। প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, একজন সহকারী জজ এতদিন ২ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের (সম্পত্তি বা অর্থে যে অঙ্কের টাকা নিয়ে বিরোধ) মামলা নিষ্পত্তি করতে পারতেন। এখন সেই এখতিয়ার বাড়িয়ে ১৫ লাখ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে সিনিয়র সহকারী জজের বিচারিক এখতিয়ার ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা এবং আপিল শুনানির ক্ষেত্রে জেলা জজের এখতিয়ার ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ৫ কোটি টাকার কম মূল্যমানের কোনো মামলায় যুগ্ম-জেলা জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল বা কার্যক্রম হাই কোর্ট বিভাগে বিচারাধীন থাকলে তা জেলা জজ আদালতে স্থানান্তরের বিধান রাখা হয়েছে। আগে ৫ কোটি টাকার কোনো আপিল হলে হাই কোর্টে যাওয়া লাগলেও আইন সংশোধন হলে জেলা জজ সেই আপিল শুনানি করতে পারবেন। তিনি জানান, ২০১৬ সালে আইন করে সিভিল কোর্টগুলোর বিচারিক এখতিয়ার বাড়ানো হলেও হাই কোর্ট তা স্থগিত করে দেয়। ফলে নতুন করে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর