যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সচিব কারার মাহমুদুল হাসান বলেন, বিআরসিটি কর্তৃপক্ষের কোনো পেশাগত যোগ্যতা নেই। নেতৃত্বে বসানো হয় আমলা পর্যায়ের লোকদের। এখানে যোগ্য লোকেরা আসতেও চান না। এখন চুরি-চামারির প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বিআরটিসি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন। আলাপচারিতায় সাবেক এই সচিব বলেন, এখানে ভালো লোকেরা আসতেও চান না। তাদের এমনভাবে অপমান করে বের করে দেওয়া হয়, যাতে তারা ছুটি নিয়ে চলে যেতে বাধ্য হন। এখান থেকে কেউ সম্মান নিয়ে চলে আসতে পারেন না। এ কারণে বিআরটিসির মূল সমস্যা হচ্ছে ব্যবস্থাপনায়। তিনি বলেন, এখন বিআরটিসির বাসগুলো আসছে ভারত থেকে। এগুলো ছয় মাস থেকে এক বছর কোনোমতে চলে। এরপর আর এই বাসগুলোর কোনো খবর থাকে না। কারণ, এর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। দক্ষ ড্রাইভারদের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হয় না। তাছাড়া বাস মালিক শ্রমিকদের নানা ইউনিয়নের কারণে ধর্মঘট করে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সার্ভিস বন্ধ করে রাখা হয়। সরকারের সেই সক্ষমতা নেই যে, আইন প্রয়োগ করে এসব বাস চালাবে। সেই ব্যবস্থাপনাও লক্ষ্য করা যায় না। তিনি বলেন, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪৪ ভাগ ড্রাইভারের চোখের দৃষ্টিশক্তি কম। এ বিষয়টা কেউ দেখছে না। গাড়ি বা ড্রাইভারের লাইসেন্স, ফিটনেস দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এসব বিষয় কেউ দেখছে না। অব্যবস্থাপনা আর চুরি-চামারির কারণেই বিআরটিসি ডুবতে বসেছে। লক্কড়ঝক্কড় বাস সর্বোচ্চ দুই বছর চলে তা জঞ্জালে পরিণত হয়। এটা তদারকি করার কেউ নেই। কারার মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, যারা গাড়ির ফিটনেস ছাড়পত্র দেন সেই বিআরটিএর লোকবলের যথেষ্ট অভাব। যেখানে ৪ হাজার লোকের প্রয়োজন সেখানে প্রায় অর্ধেকই নেই। এই সেবা খাতের প্রতিটি স্তরেই নানা সমস্যা। জনবল যাও আছে তাদের যুগোপযোগী ট্রেনিং নেই। ড্রাইভারদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। মাঝেমধ্যে বলা হয়, ১ লাখ ড্রাইভারকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ২০০ জনকেও ট্রেনিং দেওয়া হয়নি।