শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

নন্দীগ্রাম নিয়ে মমতা আলোচনা সমালোচনায়

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

নন্দীগ্রাম নিয়ে মমতা আলোচনা সমালোচনায়

‘আমি নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েছি, নন্দীগ্রামেই জিতব। আর জিতে আপনাদের মুখে চুনকালি মাখাব।’ পশ্চিমবঙ্গের ‘নন্দীগ্রাম’ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের পরদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এভাবেই জবাব দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

গতকাল প্রায় সারা দিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম। ভোটারদের প্রভাবিত করা, ভয় দেখানো, বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টকে বসতে না দেওয়াসহ একাধিক অভিযোগের ঘটনা ঘটে এখানে।

এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি মন্তব্য জল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল বিকালে উলুবেড়িয়ার একটি সভায় মোদি বলেন, ‘...আপনি নাকি আরেকটি আসন থেকে মনোনয়ন জমা দেবেন, এই গুঞ্জন কি সত্যিই দিদি? অন্যদিকে শুক্রবার সকালের দিকে কোচবিহারের শীতলকুচিতে একটি নির্বাচনী প্রচারণায় এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘বাংলায় গত দুই দফার নির্বাচনে আমরাই জিতছি। নন্দীগ্রামে মমতা দিদি হারতে চলেছেন।’ এসব মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে শুক্রবার কোচবিহার জেলার দিনহাটায় এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পর্যন্ত সহ্য করব। তারপর নির্বাচনে হেরে গেলে আমি দেখব এই গুন্ডাগুলো কোথায় যায়। যেখানেই যাবে টেনে নিয়ে আসব। ওদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা আছে। সেদিন অমিত শাহ কোথা থেকে বাঁচাবেন? তিনি কোথায় থাকবেন, আগে সেটা ঠিক করুক। এই মানুষটা দেশ চালান না, কেবল গুন্ডাগিরি করেন? আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব তিনি যেন তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করেন, পরে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করবেন। আমি আপনার দলের লোক নই যে, আপনি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করবেন বা অন্য জায়গা থেকে আমাকে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেবেন। আমি নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েছি, নন্দীগ্রামে জিতব। আপনাদের মুখে চুনকালি মাখাব। আমি আপনার বুদ্ধি নিয়ে কাজ করতে রাজি নই। আমি মানুষের বুদ্ধি নিয়েই কাজ করি।’ বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দিনহাটার সভা থেকে এ দিন ছিটমহল ইস্যুতেও মুখ খোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘এখানকার ছিটমহল সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। গত ৬০ বছর ধরে সমস্যাটা জিইয়ে ছিল। আমরা সমাধান করে দিয়েছি। ওখানকার মানুষ যাতে ভালো করে, মানুষের মতো মানুষ হয়ে বাঁচতে পারে- তার জন্য যে কাজ আমরা করেছি, আগামী দিনেও করব। ভারত-বাংলাদেশ  মৈত্রী দীর্ঘজীবী হোক, এটা আমি নিশ্চয়ই বলব।’ মোদির বাংলাদেশ সফর নিয়ে খোঁচা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের সময় হঠাৎ করে মোদিবাবু বাংলাদেশে গিয়ে বলছেন আমায় ভোট দাও, মানে ভোটের কথাই বলতে গেছেন। এতদিন কেন সেখানে যাননি? ওখানে তো লোকনাথ ঠাকুরের মন্দির আছে, অনুকূল চন্দ্র ঠাকুরের অনেক দেব-দেবীর মন্দির আছে। গুরুচাঁদ-হরিচাঁদ ঠাকুরের বাংলাদেশে জন্ম হলেও কোনো দিন ওরা (বিজেপি) তাদের দেখেননি। মতুয়াদের যে বড়মা (প্রয়াত বীনাপাণি দেবী), যখন কেউ ওনাকে চিকিৎসা করানোর জন্য নিয়ে যেত না, আমি ওকে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়েছি, নিজের রুপিতে তার চিকিৎসা করিয়েছি। মতুয়াদের জন্য হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ স্টেডিয়াম, স্টেশন রাস্তা করে দিয়েছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর