অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট হবে দেশের দরিদ্র মানুষের বাজেট। এটা হবে গরিব মানুষের জন্য নিবেদিত বাজেট। আমরা মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য বাজেটে জায়গা করে দেব। গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। করোনায় দরিদ্রদের অবস্থা নিয়ে প্রকাশিত দুটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, গরিব মানুষের জন্য আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে বের করে নিয়ে আসা। যারা হতদরিদ্র বা অতি গরিব আছে তাদের আমরা মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। আর গবেষণা করে যদি তারা কোনো তথ্য দিয়ে থাকে সেটা পরিসংখ্যান ব্যুরো দেখবে। তাদের অ্যাসেসমেন্ট আমরা গ্রহণ করব। সেটা এখনো তৈরি হয়নি, হলে আমরা অবশ্যই আপনাদের জানাব। দরিদ্রদের মূল স্রোতে আনতে বাজেটে বড় একটি বরাদ্দ দরকার, সেক্ষেত্রে নতুন করে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বাড়তি কোনো বরাদ্দ রাখবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আগামী বাজেট নিবেদিত থাকবে এ দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য। এরাই অগ্রাধিকার পাবেন। সুতরাং আমরা মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য বাজেটে জায়গা করে দেব।’ গত বছর করোনায় দরিদ্রদের অর্থ সহায়তা বিতরণে কিছুটা গোলমাল হয়েছে, এ বছর ৩৫ লাখ মানুষকে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত কী জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মিসম্যাচটা হওয়ার কারণ হলো, আমাদের যেসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বা পিছিয়ে পড়া জনগণের কথা বলছেন, তাদের যে আইডি কার্ড বা মাধ্যম রয়েছে সেখানে সরাসরি ট্রান্সফার করে দিই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেটি ট্রান্সফারের উপযুক্ত থাকে না। সেজন্য একটু বিলম্ব হয়। কিন্তু আমরা কাজগুলো করছি। যাদের আমরা আড়াই হাজার টাকা করে দেব, সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে এই টাকা সরাসরি ট্রান্সফার করা। সরাসরি ট্রান্সফার করতে গেলে সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে। আর একবার যদি সিস্টেমে চলে আসে তাহলে ভবিষ্যতে এর চেয়ে সহজ কাজ আর হবে না। তখন আমরা কম সময়ে অনেক বেশি কাজ করতে পারব। এখন আমরা সে সিস্টেম দাঁড় করানোর কাজটাই করছি। তিনি বলেন, জনপ্রতি এই আড়াই হাজার টাকা করে সহায়তার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। এই আড়াই হাজার টাকা বিতরণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। এই অর্থ বিতরণে এবার যেন কোনো অনিয়ম বা ত্রুটি না হয় সেদিকেও নজর রাখা হবে বলে জানান তিনি। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে যে শর্তগুলো ছিল সেগুলো আমরা পূরণ করে নিয়ে এসেছি। এগুলো একই প্রকল্প। আগেরগুলোর সঙ্গে দেখলে বোঝা যাবে বিভিন্ন জিনিস এনে যুক্ত করতে হয়েছে। যেসব মহাসড়কে আমাদের পরিবহনের জন্য এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব এসেছিল সেগুলো একটার পর একটা অনুমোদন হচ্ছে। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সংকট রয়েছে বলে গণমাধ্যমে এসেছে, আজ (গতকাল) বৈঠকে ভ্যাকসিনের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিছু বলেছেন কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আজ (গতকাল) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাব এসেছিল ১৩ হাজার ৮৮১টি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য আমরা এসেনসিয়াল ড্রাগস থেকে ওষুধ কিনব। এর বাইরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়নি।