শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

কেমিক্যাল ব্যবসা অন্যত্র সরাতে সরকারি ভূমিকা দুর্বল

নিজস্ব প্রতিবেদক

কেমিক্যাল ব্যবসা অন্যত্র সরাতে সরকারি ভূমিকা দুর্বল

ড. ইজাজ হোসেন

পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল ব্যবসা অন্যত্র সরানোর ক্ষেত্রে সরকারি ভূমিকা দুর্বল। এ ব্যাপারে সরকার কতটা আন্তরিক সেটিও দেখতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের জন্য একটি  কেমিক্যাল পল্লী তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (অবসরপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, কেমিক্যাল পল্লীটি ঢাকা থেকে বেশি দূরে হলে চলবে না। ব্যবসায়ীরা সহজেই দিনে দিনে যেন কেমিক্যাল পল্লী থেকে রাজধানীতে আসা-যাওয়া করতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে এই ব্যবসায়ীদের জন্য বাস সার্ভিস চালুর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মাথায় রাখতে হবে এই ব্যবস্থা ব্যবসায়ীরা নিজেরা করে নিতে পারবেন না। তাদের জন্য এমন সুবিধা সংশ্লিষ্টদের তৈরি করে দিতে হবে। ড. ইজাজ হোসেন বলেন, আবার রাজধানীতে থেকেও নিরাপদে কীভাবে ব্যবসা চালিয়ে রাখা যায় সে ব্যাপারে আমাদের বেশ কিছু পরামর্শ রয়েছে। বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এসব বিষয় নিয়ে কাজও করে। দুর্ঘটনা কেউ কখনো শতভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কিন্তু আমাদের পরামর্শগুলো মেনে চললে অন্তত আশি থেকে নব্বই শতাংশ দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বুয়েটের নিরাপত্তা সম্পর্কিত নিয়ম-কানুন অনুশীলন করে সনদ নিয়ে কেমিক্যাল পল্লী বা অন্যত্র ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন। তিনি বলেন, যদি কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের পুরান ঢাকা থেকে সরিয়ে নিতে হয় তবে সরকারের যা যা করা উচিত তা করতে হবে। আবার কেমিক্যালের ব্যবসা নিরাপদভাবে পরিচালনার জন্য অনেক যন্ত্রপাতি ও পদ্ধতি রয়েছে যা ব্যবসায়ীরা অনুসরণ করেন না। অথচ এগুলো অনুসরণ করলেই দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, দুর্ঘটনা যে একেবারেই হবে না তা নয়, কখনো না কখনো একটি-দুটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতেই পারে। কিন্তু আমাদের  কেমিক্যালের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনা রোধ করতে যা যা করা প্রয়োজন তা করতে হবে এবং দক্ষ অর্গানাইজেশনকে দিয়ে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ড. ইজাজ হোসেন বলেন, কেমিক্যাল থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনা রোধে সরকারকে দ্রুত ঢাকার বাইরে কেমিক্যাল পল্লী তৈরিসহ সেখানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি এবং সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এ ছাড়া বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে সরকার এসব কেমিক্যাল দোকান বা কারখানা চিহ্নিত করে দিতে পারে। এতে এসব প্রতিষ্ঠানের আশপাশে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা সচেতন হবেন। একই সঙ্গে সেখান থেকে এসব প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য এক ধরনের সামাজিক চাপও তৈরি হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর