বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

কালো টাকা সাদার সুযোগ আগামী বাজেটেও

নিজস্ব প্রতিবেদক

কালো টাকা সাদার সুযোগ আগামী বাজেটেও

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও কালো টাকা (অপ্রদর্শিত আয়) সাদা করার সুযোগ বহাল রাখা হবে। তিনি বলেন, যতদিন অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শিত না হবে, ততদিন পর্যন্ত প্রদর্শিত করার সুযোগ রাখা হবে। গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে অনলাইন জুম প্ল্যাটফরমে ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। নতুন অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে কি-না জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এবারও সেটি কন্টিনিউ করব। যতদিন পর্যন্ত অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শিত না হবে ততদিন আমরা এটি কন্টিনিউ করব। অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার মধ্যেও আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে। করোনা থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর একের পর এক সাহসী প্যাকেজ দিয়েছেন এবং সব ক্ষেত্রেই সঠিক উদ্যোগের কারণেই মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনার সময় যে সাহসী প্যাকেজগুলো নিয়েছেন একের পর এক এবং সবগুলো ক্ষেত্রেই তিনি স্পর্শ করেছেন। সে কারণেই আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির প্রত্যেকটিই এখন উন্নতির দিকে, নেগেটিভ কিছু নেই।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪৭ যা আগের মতোই আছে। দুর্যোগের মধ্যেও এপ্রিল পর্যন্ত আমাদের পণ্য রপ্তানি ৩২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার, যেটার গ্রোথ ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। রেমিট্যান্সের গ্রোথ হলো ৪০ শতাংশ। ১১ মাসে রেমিট্যান্স হয়েছে ২২ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভে গত জুনে ছিলে ৩৬ বিলিয়ন ডলার, এখন এটি ৪৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। এ মাসেই এটি ৪৫ বিলিয়ন ডলার হবে। আমরা আশা করি আগামী অর্থবছর নিঃসন্দেহে এটা ৫০ বিলিয়ন ডলার টাচ করবে।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে স্বীকার করতে হবে আমরা আগের চেয়ে অনেক ভালো করছি।

ভালো করার পেছনে যুক্তি হলো প্রধানমন্ত্রী সময় উপযোগী, সময়মতো এবং প্রণোদনা দিয়েছেন যা প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছেছে। যারা চাকরি হারিয়েছেন, যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, অটিস্টিক সবাইকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই টাকার সাপ্লাই এখন বেশি। বিশেষ করে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি এখন অনেক ভালো। আমাদের ইমপোর্ট আগের চেয়ে অনেক ভালো হচ্ছে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও বলেন, নন পারফরমিং লোন অনেক কমে আসছে, এখন ৭ দশমিক ৬৬ আছে। গত বছরের জুনে ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। পুঁজিবাজারে গত বছরের জুনে ৩ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ছিল। এখন সেটা বেড়ে ৪ লাখ ৯৫ হাজার হয়েছে। আমাদের জাতীয় রাজস্ব নিয়ে সবসময় বিচলিত থাকি, সেই জাতীয় রাজস্ব এপ্রিল পর্যন্ত গ্রোথ ১১ দশমিক ৮ শতাংশ।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অপ্রদর্শিত টাকা কী কী কারণে হয়? জমি রেজিস্ট্রেশন ফি আমরা অনেক রেখে দিয়েছি। মৌজার যে প্রাইস রেখেছেন সেটা অনেক কম। মার্কেট প্রাইসে লেনদেন হলে অপ্রদর্শিত টাকা থাকত না। আমাদের সিস্টেমের কারণেই এখন বায়ার এবং সেলারের কাছে তাদের অপ্রদর্শিত টাকা থাকে, সেজন্য তারা বিপদে পড়ে। আগে ইনকাম ট্যাক্স রেট বেশি ছিল, কেউ দিত না। সেজন্য আমরা পর্যায়ক্রমে ইনকাম ট্যাক্স রেট কমিয়ে এনেছি। আমরা আশা করি অপ্রদর্শিত টাকা আমাদের ইকোনমিক সিস্টেম থেকে বিলীন হয়ে যাবে, থাকবে না।

সর্বশেষ খবর