বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

থোক বরাদ্দের ১৮০০ কোটি টাকা গেছে ভ্যাকসিনে

নতুন বাজেটে থাকছে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

করোনা মহামারী প্রতিরোধে চলতি অর্থবছরের বাজেটে যে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল সেখান থেকে মাত্র ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছে সরকার। চুক্তির পর সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাজেটে বরাদ্দকৃত টাকা ব্যয় হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে নতুন অর্থবছরে দেশের মানুষকে টিকার আওতায় আনতে আবারও বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানান, গত বছর চুক্তি অনুযায়ী সেরামের ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। ফলে এ বাবদ অর্থ বরাদ্দ রাখলেও তা ব্যয় হয়নি। সরকার করোনা মহামারী প্রতিরোধে দেশের বেশির ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে এখন নতুন করে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে যাচ্ছে। এর ফলে নতুন বাজেটেও ভ্যাকসিনের জন্য থোক বরাদ্দ থাকছে। সূত্র জানান, বাংলাদেশে কভিড-১৯ মোকাবিলায় জাতীয়ভাবে টিকাদানের যে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর সে অনুযায়ী তিন পর্যায়ে পাঁচ ধাপে ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। এ পরিমাণ মানুষকে টিকা দিতে সরকারের প্রায় ২৫০ কোটি ডলার অর্থের প্রয়োজন, স্থানীয় মুদ্রায় যা ২১ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকাসহ বেশ কয়েকটি দাতা সংস্থা সরকারকে ভ্যাকসিন কিনতে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দাতা সংস্থাগুলোর এ ঋণ সহায়তার পাশাপাশি বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, যাতে জরুরি প্রয়োজনে ভ্যাকসিন আনতে অর্থের কোনো সমস্যা না হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার রাশিয়া ও চীনের করোনা টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম থেকে ভ্যাকসিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এর অনুমোদনও মিলেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আখতার বলেন, ‘চীন থেকে যে ৫ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে তার বাইরে আরও ভ্যাকসিন কেনা হবে।’ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরে বরাদ্দকৃত ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সেরামের টিকা কিনতে মাত্র ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ৩৫ লাখ পরিবারে যে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন, ভ্যাকসিনের থোক বরাদ্দ থেকে সেখানে গেছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। ফলে সব মিলিয়ে থোক বরাদ্দ থেকে খরচ হয়েছে মাত্র ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বাকি ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা রয়ে গেছে।

কর্মকর্তারা বলেন, চীনের পাশাপাশি রাশিয়া থেকেও টিকা আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জুনের মধ্যে এসব ভ্যাকসিন আনতে পারলে থোক বরাদ্দে অব্যয়িত যে ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা আছে সেখান থেকে ব্যয় করা হবে। আর জুনের পর ভ্যাকসিন আনা হলে নতুন বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার যে থোক বরাদ্দ দেওয়া হবে সেখান থেকে অর্থ পরিশোধ হবে।

সর্বশেষ খবর