লকডাউনের ১২তম দিনে গতকাল রাস্তায় গাড়ির আধিক্যের কারণে দেখা দিয়েছে যানজট। একই সঙ্গে বেড়েছে পুলিশ কর্তৃক মামলা ও জরিমানার সংখ্যা। বিনা কারণে বাসা থেকে বের হওয়ার অভিযোগে গতকাল ৬০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ছাড়া মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ১৬৮ জনকে মোট ২ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ ৭২৭টি গাড়ির জরিমানা করেছে ১৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ২১ জুলাই ঈদুল আজহা সামনে রেখে লকডাউন শিথিল করা হবে এমন খবরে বিপুলসংখ্যক মানুষ গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হন। রাস্তায় নামেন উবার-পাঠাওয়ের মোটরসাইকেল রাইডাররা।
রিকশার উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। ফলে সকাল থেকেই রাজধানীর কাকরাইল, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, নিউমার্কেট, বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় যানজট দেখা দেয়। রাস্তায় রিকশার পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িই ছিল বেশি।
জানা গেছে, চলমান বিধিনিষেধ আগামীকাল ১৪ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এরপর কিছুটা শিথিল করা হতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরশু ১৫ জুলাই থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার বিষয়ে ইতিমধ্যে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। দূরপাল্লার বাস ও সিটি সার্ভিসের বাসও চালুর দাবি জানিয়েছেন বাস মালিক ও শ্রমিকরা। এসব কারণে মানুষ রাস্তায় নেমে আসছে।রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকার বাসিন্দা রহতমউল্লাহ বলেন, ঈদ সামনে রেখে জরুরি কিছু কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তাই ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে ভাড়া করা মোটরসাইকেলে করে গুলশান পর্যন্ত যান। এ জন্য অবশ্য ভাড়া গুনতে হয়েছে ৩০০ টাকা। তাকে বহনকারী মোটরসাইকেল রাইডার হেলাল বলেন, যাত্রী বহন নিষেধ। এর পরও পেটের দায়ে মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন। কিন্তু সকালেই ট্রাফিক সার্জেন্ট ২ হাজার টাকা জরিমানা করে মামলা দিয়েছেন।
রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, বড় রাস্তাগুলোর মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও র্যাব চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ির কাগজপত্র তল্লাশি করছে। মানুষ বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেওয়ার পর পুলিশ সেগুলো যাচাই-বাছাই করার চেষ্টা করছে। আর যাদের গাড়ির কাগজপত্রে ত্রুটি পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে রেকার বিলের মামলাও করা হয়েছে অনেকের নামে।
রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি ও পুলিশ কর্তৃক জরিমানা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ডিএমপির মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, তৈরি পোশাক কারখানা খোলা। সেগুলোতে প্রচুর মানুষ যাচ্ছে। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে অনেকে বের হয়েছে। আমরা চেকপোস্টের মাধ্যমে প্রতিটি গাড়িকে তল্লাশির আওতায় নিয়ে এসেছি। যারা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি তাদের বিরুদ্ধে মামলা, গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো ও রেকারিং করেছি। এতে মামলা ও ডাম্পিং এবং জরিমানা আদায়ের হার বেড়েছে।’