শিরোনাম
সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সাতক্ষীরায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু

পরিবারের দাবি পিটিয়ে হত্যা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বাবলু সরদারের সাতক্ষীরার গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে বাবলু সরদারকে গোয়েন্দা পুলিশের লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে। তারা তার লাশ নিতে অস্বীকার করে স্বজনকে ফেরত দেওয়ার দাবি করেন।

তবে পুলিশের দাবি বীর মুক্তিযোদ্ধা জুড়ন সরদারের ছেলে বাবলু সরদার (৫৬) গোয়েন্দা পুলিশের লকআপের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে। তার বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মাদক মামলা রয়েছে। তবে পুলিশ লকআপে মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের এএসআই শেখ সোহেল ও কনস্টেবল শরিফুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জেলা গোয়েন্দা   পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন আলম চৌধুরী জানান, বাবুল সরদার নামের ওই ব্যক্তিকে শনিবার সকালে তার গ্রামের বাড়ি দেবহাটা উপজেলার বসন্তপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া বাবুল সরদারকে গোয়েন্দা পুলিশের লকআপে রেখে দেওয়া হয়। গতকাল  তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। শনিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় তিনি গলায় নিজের কোমরে ব্যবহৃত সুতালি (রশি) লকআপের গেটের গ্রিলের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। বাবুল সরদারের মেয়ে সুলতানা মুন্সি জানান, শনিবার সকালে বোরকা পরা এক নারী আকস্মিকভাবে তাদের বাড়িতে ঢুকে তার বাবার ঘরে যেয়ে ফেনসিডিল রেখে নিকটে থাকা গোয়েন্দা পুলিশকে ইশারা করে। সঙ্গে সঙ্গে তার বাবাকে ওই ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার দেখানো হয়। এ সময় ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ৩৬ হাজার টাকাও নিয়ে যায় তারা। মুন্নি বলেন, আমার বাবা কোমরে কখনো সুতালি (রশি) ব্যবহার করতেন না। তাহলে তিনি কীভাবে লকআপের মধ্যে আত্মহত্যা করলেন প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, গেটের গ্রিলের সঙ্গে নিজেকে সুতালিতে ঝুলিয়ে কি কখনো আত্মহত্যা করা সম্ভব? পুলিশ তাকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই। এদিকে বাবুল সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন জানান, তার বাবাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়। এ সময় বাড়িতে থাকা ৩৬ হাজার টাকাও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা নিয়ে যায়। তিনি বলেন, পুলিশ আমার বাবাকে মারধর করেছে এবং একপর্যায়ে তিনি মারা গেছেন। এখন পুলিশ নাটক করে বলছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আলমগীর হোসেন আরও বলেন, পুলিশ আমাদের বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছে ‘আপনাদের লোক আত্মহত্যা করেছে। লাশ নিয়ে যান’। আমরা বলেছি আমাদের স্বজনকে জীবিত অবস্থায় ফেরত দিতে হবে। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি নিজের কোমরে থাকা রশি পেঁচিয়ে লকআপের গেটের গ্রিলে ঝুলে রাত ৩টার দিকে আত্মহত্যা করেছেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট আকতার হোসেন ও মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত কুমারের উপস্থিতিতে লাশ নামিয়ে ময়নাতদন্ত করার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপার আরও জানান, এই স্পর্শকাতর ঘটনায় পুলিশের এএসআই শেখ সোহেল ও কনস্টেবল শরিফুলসহ দুই সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর