শনিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জে নানক-আজম আত্মবিশ্বাসী আইভী, ব্যস্ত তৈমূর

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জে নানক-আজম আত্মবিশ্বাসী আইভী, ব্যস্ত তৈমূর

নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র তৈমূর আলম খন্দকার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী দল এবং দলের বাইরে ভোটারদের টার্গেট করে মাঠে কাজ করছেন। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারও থেমে নেই। গতকালও গণসংযোগ করেছেন। সঙ্গে ছিলেন দল এবং দলের বাইরের নেতা-কর্মীরা। এদিকে আইভীর পক্ষে নারায়ণগঞ্জের নেতা-কর্মীদের একাট্টা করতে কাজ করে চলছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। মির্জা আজমকে বলা হয় ভোটের অভিজ্ঞ     নেতা। সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নারায়ণগঞ্জে দলের জয় আনতে নানক-আজম জুটি ব্যাপকভাবে তৎপর। দলের নীতিনির্ধারক মহলকেও তারা জানাচ্ছেন সর্বশেষ পরিস্থিতি। নৌকার জয়ই তাদের সামনে টার্গেট। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আইভী নিজের অবস্থান নিয়ে ব্যাপকভাবে মাঠ চাষে বেড়াচ্ছেন। কে তার পক্ষে থাকল বা বিপক্ষে গেল তা তিনি কোনো গুরুত্বই দিচ্ছেন না। তার টার্গেট সাধারণ মানুষ। সর্বস্তরের মানুষের সমর্থনে জয়ী হতে চান তিনি। নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তল্লা এলাকায় গতকাল নির্বাচনী প্রচারণাকালে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর যে অভিযোগ করছেন আওয়ামী লীগের লোকেরা তার পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছেন তা কতটুকু সত্য? জবাবে আইভী বলেন, এটা মিথ্যাচার। পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার মতো অপরাজনীতি আমি করি না। তিনি বলেন, এখন পোস্টার দেখে মানুষ ভোট দেয় না। ২০১১ সালে শহরে আমার কোনো পোস্টার ছিল না। তবুও নারায়ণগঞ্জের মানুষ কিন্তু আমাকেই ভোট দিয়েছিল। ২০১৬ সালে ধানের শীষের প্রার্থীর সবচেয়ে বেশি পোস্টার ছিল, আমার ছিল না। এবারও আমার পোস্টার কম। আইভী বলেন, এস এম আকরাম (আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি) ২০১১ সালে আমার সঙ্গে ছিলেন, তখন তিনি আমাদের দল করতেন। এখন তো তিনি আমাদের দল থেকে পদত্যাগ করে অন্য  দলে (নাগরিক ঐক্য) চলে গেছেন। তাহলে তিনি কীভাবে আমার সঙ্গে থাকবেন! তিনি তো এখন আওয়ামী লীগেই নেই।  তিনি বলেন, প্রতিদিনই ভোটারদের চাহিদা বাড়ছে। নতুন নতুন এলাকায় যাচ্ছি তাদের চাহিদা শুনছি। তাদের চাহিদা পূরণ করাই আমার টার্গেট। যত রটে তত ঘটে না। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির যে ধারাবাহিকতা, এখানে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়, প্রপাগান্ডা রটানো হয়। কিন্তু অবশেষে সব ভোট সুন্দর হয় পরিবেশ সুষ্ঠু থাকে। আমি আশা করি এখানেও তাই থাকবে। আইভী বলেন, ভোটাররা আমায় অনেক দিন ধরে চেনেন। আমি অন্যায়-অত্যাচার করি না। চাঁদাবাজিও করি না। তাই ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটাররা আমাকেই বেছে নেবেন। তাদের কাছে আমার আবেদন আপনারা যদি শান্তিতে থাকতে চান, তাহলে নিঃশঙ্কচিত্তে আমায় ভোট দিন। আওয়ামী লীগ জিতলে সিটিতে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আইভী বলেন, একটা অপপ্রচার করা হচ্ছে মেয়র থাকতে আমি নাকি ট্যাক্স বাড়িয়েছি। আমি কোনো ট্যাক্স বাড়াইনি। বরং ট্যাক্স কমানোর আবেদন নিয়ে কেউ এলে সঙ্গে সঙ্গে ১৫ শতাংশ ট্যাক্স মওকুফ করে দিয়েছি। কারণ বিধি অনুযায়ী মেয়র ওইটুকু পরিমাণে মওকুফ করতে পারে। সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার সকালে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগের সময় নবীগঞ্জ ঘাটে ভোটারদের উদ্দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ৫০ বছরে তার কোনো গণবিরোধী ভূমিকা নেই। তাই তার বিশ্বাস ভোটাররা তাকেই জয়যুক্ত করবেন। তৈমূর বলেন, দেশবাসী স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জাতীয় প্রতীকের ব্যবহার পছন্দ করেন না। বর্তমান সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মতলবে এটা প্রতীক ব্যবহারের নিয়ম চালু করেছে। কিন্তু জনগণ স্থানীয় নির্বাচনকে স্থানীয়ভাবেই চিন্তা করে। তৈমূর বলেন, তার দল বিএনপি একটা ভালো কাজ করেছে- তাকে নৌকার ভোট পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, কিন্তু আমি নির্বাচনের মাঠে সমান সুযোগ পাচ্ছি না। সে জন্য আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এ টি এম কামালকে দিয়ে অভিযোগ দাখিল করেছি। অভিযোগে বলা হয়েছে- ওরা বড় বড় তোরণ বানাচ্ছে। হাতি মার্কার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। সকাল থেকে মাইকিং করছে। বড় বিলবোর্ড করছে। বন্দরে তারা স্টেজ করে জনসভা করছে। এটা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। বন্দরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের সামনে থেকে গতকাল শুরু হওয়া তৈমূরের গণসংযোগে অংশ নেন এস এম আকরাম, আতাউর রহমান মুকুল, দেলোয়ার হোসেন, এহসান উদ্দিন আহমেদ, মাকসুদ হোসেন, কামাল হোসেন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, নুর উদ্দিন, মাজহারুল ইসলাম হিরণ, কাজী নাহিসুল ইসলাম সাদ্দাম প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর