দেশে ব্যবসা করতে গিয়ে নানা বাধার সম্মুখীন হন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে দুর্নীতি, অদক্ষ প্রশাসন ও অর্থায়নের সীমিত সুযোগ বড় বাধা। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক জরিপ মতামতে এ কথা বলা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজস্ব কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপের ফল প্রকাশ করে সিপিডি। বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ-২০২১ উদ্যোক্তা মতামত জরিপের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। অনুষ্ঠানে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দুর্নীতি, অদক্ষ প্রশাসন ও সীমিত অর্থায়নের সুযোগের এই ত্রয়ী চ্যালেঞ্জ ব্যবসায়ীদের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে ব্যবসার খরচ বাড়ছে। যার প্রভাব পড়ছে ভোক্তার ওপর। জরিপে দেখা গেছে, ২৮ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, করোনার প্রভাবে তাদের খরচ কমাতে হচ্ছে। আর খরচ কমাতে গিয়ে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটছে। আগামী ১০ বছরে দেশে নতুন কী কী ব্যবসা উঠে আসবে তারও একটি ধারণা পাওয়া গেছে জরিপে। দেখা গেছে, ৬৭ শতাংশ বলেছে, ডিজিটাল আর্থিক সেবা আরও বিকশিত হবে। দক্ষ মানবসম্পদ খাতকে দ্বিতীয় অবস্থানে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। তৃতীয় অবস্থানে আছে ডেটা ম্যানেজমেন্ট। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে তাদের ব্যবসা পুনরুদ্ধারে আরও তিন বছর সময় লাগবে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ব্যবসায়ীরা এখনই ফিরে এসেছেন এটা বলা যাবে না। তিনি আরও বলেন, সিপিডি মনে করে  মানবাধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে, এ নিয়ে যদি জটিলতা তৈরি হয়, তাহলে ব্যবসায় দীর্ঘমেয়াদে আশঙ্কা তৈরি হবে। করোনার পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হচ্ছে এটা ঠিক, কিন্তু সে পুনরুদ্ধার অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে না। এক ধরনের বৈষম্যমূলক পুনরুদ্ধার হচ্ছে। এ বিষয়টি সরকারের নীতিকাঠামোতে চিন্তা করতে হবে। খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দুর্নীতি, অদক্ষ প্রশাসন ও আর্থিক সীমাবদ্ধতায় বড় ব্যবসায়ীদের খুব একটা সমস্যা করছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও প্রান্তিকে যারা ব্যবসা করছেন তাদের।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি জানিয়েছে, ব্যবসায় পরিবেশ জরিপের সময়কাল ছিল গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই। দেশের ৭৩টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপটি পরিচালনা করা হয়েছিল, যাদের মূলধন ছিল ১০ কোটি টাকার ওপর। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ফরিদপুর এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। কৃষি, সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের ব্যবসায়ীদের ওপর জরিপটি করা হয়।